শেখ গফ্ফার রহমান, একাত্তর নিউজ ২৪ ডেক্সঃ
বঙ্গবন্ধুকে সরাসরি গুলি করে হত্যাকারী জঘন্য খুনি রিসালদার মোসলেমউদ্দীন গোয়েন্দাদের হাতে আটক হয়েছে। এমন একটি তথ্য জানা গেলেও কাদের হাতে আটক হয়েছে সে ব্যপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে মোসলেমউদ্দিন ভারতীয় গোয়েন্দাদের কাছে আটক থাকতে পারে এমন তথ্যও জানা গেছে।
বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আব্দুল মাজেদ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হবার পর গোয়েন্দাদের জিজ্ঞাসাবাদে মোসলেহউদ্দীন সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানায়। এসময় গোয়েন্দারা মোসলেমউদ্দীনের স্ত্রী ও সন্তানদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। তার অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয় গোয়েন্দারা। তবে হঠাৎ করেই নিখোঁজ হন মোসলেমউদ্দীন। উত্তর চব্বিশ পরগনার ঠাকুরনগর রেলস্টেশন এলাকায় অপরিচিত কিছু ব্যক্তির সাথে তাকে সর্বশেষ দেখা যায়।
সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন মোসলেমউদ্দীন গোবরডাঙ্গার ঠাকুরনগর এলাকার চাঁদপাড়া রোডের একটি বাড়িতে বসবাস করতেন। এই এলাকায় ডাক্তার দিলিপ দত্ত নামে পরিচিত ছিলেন এবং ”ইউনানী ফার্মাসী” নামে একটি প্রতিষ্টানে আয়ুর্বেদ ও হোমিও চিকিৎসা করতেন। ঠাকুরনগর রেলস্টেশনের এক নম্বর প্লাটফরমের পিছনে একটি বাড়িতে তার নিয়মিত যাতায়াত ছিল। ওই বাড়ির একটি মেয়েকে তিনি নিজ খরচে বিয়ে দিয়ে সহযোগিতা করেন। এই এলাকায় দীর্ঘ দিন ধরে বসবাস করছিলেন রিসালদার মোসলেমউদ্দীন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। যে কয়েকজন সেনা কর্মকর্তা এই হত্যাকান্ডের মিশনে অংশ নেয় তার মধ্যে রিসালদার মোসলেমউদ্দিন অন্যতম। গুলির শব্দ শুনে বঙ্গবন্ধু যখন বিষয়টি জানার জন্য নিচে নামছিলেন সেই সময় সিঁড়িতে বঙ্গবন্ধুকে নিজহাতে গুলি করে হত্যা করে এই মোসলেমউদ্দীন।
এরপর অন্য খুনীদের সাথে তিনিও বঙ্গভবনে দায়িত্বপালন করেন। জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর তাকে তেহরান ও জেদ্দা দূতাবাসে দায়ীত্ব দিয়ে পাঠান। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর অন্য খুনীদের সাথে তিনিও দেশ ছেড়ে থাইল্যান্ড হয়ে পাকিস্তানে পালিয়ে যান। এরপর জার্মানিতে রাজনৈতিক আশ্রয় নেন। তার কয়েক বছর পর চলে আসেন ভারতে এবং উত্তর চব্বিশ পরগনার ঠাকুরনগর এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।
সূত্রটি জানিয়েছে, সর্বশেষ ২০১৮ সালে সে বাংলাদেশে গিয়ে পরিবারের সাথে কয়েকদিন ছিল।