বেনাপোলে প্রবাসি হত্যায় অভিযুক্তরা অজ্ঞাত মামলায়। পরিবারের ক্ষোভ
শাহাবুদ্দিন আহমেদ, বেনাপোল প্রতিনিধি :পুলিশের হাতে আটক হওয়া ভাইয়ের তিন হত্যাকারীর নাম উল্লেখ্যসহ কয়েকজন অজ্ঞাত আসামী করে পুলিশের কাছে রাতে অভিযোগ করে এলাম। পরের দিন শুনি সবাই অজ্ঞাত আসামী হয়েছে। আমি এদিন পুলিশের কাছে মামলার কপি চেয়েছিলাম তারা বলেছিল পরে দেব। এখন বুঝতে পারছি আসামীদের বাঁচানোর জন্য আমাকে মামলার কপি হাতে দেয়নি। আমরা এ মামলা মানিনা, প্রয়োজনে আদালতেও মামলা করবো।
বৃহস্পতিবার(১৬মে ) দুপুরে ভাই হত্যার সুবিচার না পেয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে সুবিধা গ্রহনের অভিযোগ এনে এমন প্রলাপ করছিলেন পরকিয়ায় বাধা দেওয়ায় স্ত্রীর হাতে খুনের শিকার প্রবাসি জামালের ছোট ভাই মামলার বাদী বাবলুর রহমান ।
এদিকে হত্যার ঘটনায় অজ্ঞাত মামলা দায়ের হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করছেন প্রতিবেশিরাও। তবে পুলিশ বলছেন, তিনজন আটক হলেও তদন্ত শেষ না হওয়ায় অজ্ঞাত নামে হত্যা মামলা করতে হয়েছে।
বাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য আনজুয়ারা বেগম বলেন, রাতে জামাল তার স্ত্রীর সাথে ঘরে ছিল। গভীর রাতে তাকে বাড়িতে কুপিয়ে খুন করা হলো। পুলিশ বাড়ি থেকে স্ত্রী,শশুর শাশুড়িকে আটকও করলো। এলাকার সবাই জানে ঐ মেয়ে ভাল না। এ মামলায় আটকরা সকলে অজ্ঞাত আসামী কিভাবে হয়?
স্থানীয় গ্রামবাসীরা জানান, অভিযুক্তদের দুই দিন থানায় আটকে রেখেও পুলিশের তদন্ত শেষ হলোনা। এত বড় একটা ঘটনা ধামা চাপা পড়ে যাবে?
এদিকে স্থানীয় সংবাদকর্মীরাও জানায়, ঘটনার দিন সকালে হত্যার বিষয়ে জানতে সাংবাদিকরা থানায় ঢুকতে চাইলে পুলিশ ঢুকতে বাধা দেয়। তথ্য প্রকাশেও দিনভর তালবাহানা করে। অপরাধীদের হাজতে না রেখে বাইরে জামাই আদরে বসিয়ে রাখে। এতে নিহতের পরিবারও ক্ষোভ প্রকাশ করে।
এ ব্যাপারে বেনাপোল পোর্টথানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) আবু সালে মাসুদ করিম জানান, তদন্ত শেষ না হওয়ায় আটকদের নামে হত্যা মামলা হয়নি। অজ্ঞাত আসামী করে একটি মামলা হয়েছে। মামলার বাদির অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে বলেন ওটা ওদের কথা আর এটা আমার কথা।
এর আগে, প্রতিবেশি রেজাউল টুকির মেয়ে আয়েশার সাথে বিয়ে হয় হত্যার শিকার প্রবাসি
জামালের । বিয়ের পর সে সংসারে সচ্ছলতা আনতে বিদেশ(মালেশিয়ায়) যায়। সেখানে থাকা কালিন টাকা পয়সা সব শশুর বাড়িতে পাঠাতো। ইতিপূর্বে সে তিন বার বাড়িতেও এসেছে। কিন্তু স্ত্রীর পরকিয়ার কারণে তাদের মধ্যে সম্পক্য ভাল ছিল না। এর আগেও জামালকে একবার বিদ্যুত সকে মারার চেষ্টা করে স্ত্রী। গত ১৪মে সে বিদেশ থেকে বাড়ি ফিরে। ঐদিন সে উপহার সামগ্রী নিয়ে শশুর বাড়িতে যায়। হঠাৎ রাত ১ টায় শশুর বাড়ির লোকজন চিৎকার করে রোহিঙ্গারা জামালকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়েছে। পরে জামালের স্বজনরা শশুর বাড়িতে গিয়ে দেখে ঘরের সিড়িতে রক্তাত্ব অবস্থায় তার লাশ পড়ে আছে। পরে তারা বুঝতে পারে স্ত্রী, শশুর ও শাশুড়ি মিলে জামালকে খুন করে রোহিঙ্গা নাটক সাজিয়েছে। এসময় পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনা স্থলে এসে বাড়ি থেকে স্ত্রী,শশুর ও শাশুড়িকে আটক করে জামালের লাশ নিয়ে যায়। বিষয়টি নিয়ে পোর্টথানা পুলিশের তদন্ত ওসি আলমগীর হোসেন সাংবাদিকদের জানান, স্ত্রীর পরিকিয়ার কারনে এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে। তারা ঘাতক সন্দেহে জামালের স্ত্রীসহ তিন জনকে আটক করেছে।