জুয়েল রানা আব্বাসী,একাত্তর নিউজ ২৪:
যশোরে অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধে অভিযান শুরু হয়েছে। প্রথম দিন শনিবার জেলার ৬ টি অবৈধ প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। স্বাস্থ্য অধিদফতরের বেঁধে দেয়া ৭২ ঘন্টা পার হওয়ার সময়ের শেষ দিনে ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. নাজমুস সাদিকের নেতৃত্বে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়। এদিন আরও ২৫ টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিদর্শন করে কাগজপত্র সঠিক আছে কিনা তা যাচাই করা হয়েছে।
বন্ধ ঘোষণা করা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো যশোর শহরের মুজিব সড়কে অবস্থিত পিস হসপিটাল ছাড়াও তার ডায়াগনস্টিক সেন্টার, রোটারি হেলথ সেন্টারের প্যাথলজি ল্যাব, ঘোপ জেল রোডের এমসি ডায়াগনস্টিক সেন্টার, সেন্ট্রাল হসপিটালের প্যাথলজি ল্যাব ও ভোলা ট্যাংক রোডের নুরুল ইসলাম ডায়াবেটিক সেন্টার।
সিভিল সার্জন অফিসের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান জানান, বন্ধ ঘোষণা করা ৬ প্রতিষ্ঠানের স্বাস্থ্য অধিদফতরের সেন্টারের লাইসেন্সসহ প্রয়োজনীয় কোনো কাগজপত্র নেই। লাইসেন্স পাওয়ার জন্য মালিকপক্ষ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনলাইনে আবেদন করেননি। প্রতিষ্ঠানগুলোতে পুরোপুরি অবৈধভাবে কার্যত্রম পরিচালনা করা হচ্ছিলো।
এক প্রশ্নে আরিফুজ্জামান জানান, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের জন্য আলাদা লাইসেন্স করতে হয়। কিন্তু ডা. মোসলেম উদ্দিনের মালিকানাধীন পিস হসপিটাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কোনো লাইসেন্স নেই। যে কারণে দুইটি বন্ধ ঘোষণা করেছেন কর্তৃপক্ষ।
অভিযান পরিচালনার সময় ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. নাজমুস সাদিকের সাথে ছিলেন সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মীর আবু মাউদ, সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. রেহেনেওয়াজ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোহাম্মদ আরিফুজ্জামান প্রমুখ।
ভারপ্রাপ্ত সিভিল সার্জন ডা. নাজমুস সাদিক জানান, অনিবন্ধিত ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতাল বন্ধ করার জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে ৭২ ঘন্টার সময় বেঁধে দেয়া হয়। সেই নির্দেশনা অনুযায়ী অবৈধ স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে। বেঁধে দেয়া সময়ের শেষ দিনের অভিযানে ৬টি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এছাড়া ২৫ টি প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে কাগজপত্র যাচাই করেছেন টিমের সদস্যরা।
তিনি আরও জানান, অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার বন্ধে অভিযান অব্যাহত থাকবে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মনীতি মেনে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করতে হবে।
উল্লেখ্য, পিস হসপিটালের আগের নাম ছিলো ল্যাব এইড হাসপাতাল । স্বাস্থ্য অধিদফতরের লাইসেন্সের মেয়াদ ২০১৭ সালে শেষ হলেও হালনাগাদ লাইসেন্স পাওয়ার জন্য আবেদন না করেই কার্যক্রম পরিচালনা করছিলো কর্তৃপক্ষ। ২০২০ সালের ৬ আগস্ট ল্যাব এইড হসপিটালে অভিযান চালিয়ে প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে স্বাস্থ্য বিভাগ। অভিযানের নেতৃত্ব দেন সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু মাউদ। অভিযানের সময় সেখানে ভর্তি রোগী থাকলেও দেখভালের জন্য কোনো চিকিৎসক, সেবিকা ও টেকনিশিয়ান ছিলেন না। স্বাস্থ্য নীতিমালা উপেক্ষা করে কার্যক্রম পরিচালনা করায় ল্যাব এইড হসপিটাল সিলগালা করা হয়। এরপর ল্যাব এইডের সাইনবোর্ড পাল্টে হয় পিস হসপিটাল। নাম পাল্টে শেষ রক্ষা হলো না।