ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় ছাত্রলীগের ছয়টি ইউনিটের সম্মেলনের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। ওইসব ইউনিটে যারা নেতৃত্বে আসবেন তাদেরকে পরীক্ষায় বসতে হবে। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তাদেরকে নেতা হতে হবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ (কসবা-আখাউড়া) আসনের সংসদ সদস্য আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক এই নির্দেশনা দিয়েছেন। এ জন্যে তাদেরকে “কারাগারের রোজনামচা” ও “বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী” বই পড়তে হবে বলে বলেন তিনি।
মন্ত্রীর এমন নির্দেশনা পাওয়ার পর আখাউড়া উপজেলা ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতারা তৃণমূলের নেতাকর্মীদেরকে এমন নির্দেশনা পৌঁছে দিয়েছেন। এর পর থেকে তৃণমূল ছাত্রলীগের পদ প্রত্যাশীরা বই পড়তে শুরু করেছেন। ওই দুইটি বই থেকেই পরীক্ষায় প্রশ্ন থাকবে। এ নিয়ে নেতা-কর্মীদের মাঝে উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছে।
আখাউড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মো: শাখাওয়াত হোসেন নয়ন জানান, নেতৃত্ব বাছাই করতে পরীক্ষা নেয়ার জন্যে জাতির পিতার আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ কারাগারের রোজনামচা ও “বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী” পড়তে হবে।
আমাদের এলাকার প্রিয়নেতা মাননীয় আইনমন্ত্রী এ সম্পর্কে নির্দেশ দিয়েছেন। সে মোতাবেক আমরা প্রত্যেক প্রার্থীকে দুইটি বই পড়ার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। নেতা-কর্মীরাও বিষয়টি ভালোভাবে নিয়েছে। আশা করি যোগ্য নেতৃত্ব বাছাইয়ে এমন উদ্যোগ অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
উপজেলা ছাত্রলীগ সূত্র জানায়, পাঁচটি ইউনিয়ন ও জংশন শাখা সম্মেলনের প্রস্তুতি হিসেবে সভাপতি ও সম্পাদক পদ প্রত্যাশীদের মধ্যে ফরম বিক্রি শুরু হয়েছে। ফরম সংগ্রহকারিদেরকে জানিয়ে দেয়া হচ্ছে, ওই দুইটি বই থেকে পরীক্ষা নেয়া হবে। একই সঙ্গে প্রত্যেকের ছাত্রত্ব সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে নেতৃত্ব বাছাই করা হবে। ইতিমধ্যেই ৫১ টি ফরম বিক্রি হয়েছে। আজ বুধবার মধ্যরাত পর্যন্ত ফরম বিক্রি চলবে।
আখাউড়া মনিয়ন্দ ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি পদপ্রার্থী মশিউর রহমান আজ বুধবার সন্ধ্যায় বলেন, ‘ওই দুইটি বই পড়ার জন্য প্রধানমন্ত্রীও নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই নির্দেশনা আমরা অনেকেই পালন করছিনা। এমন নির্দেশনার জন্য মাননীয় আইন মন্ত্রী ও আমাদের আখাউড়া ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
সম্মেলনকে কেন্দ্র করে এখন থেকে সুযোগ হয়েছে বইটি পড়ার। খুবই ভালো লেগেছে বিষয়টি জানার পর। আমি ইতিমধ্যেই বইটি পড়া শুরু করে দিয়েছি। এর মধ্য দিয়ে দেশ ও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে আরো ভালোভাবে জানতে পারবো। আমার মতো অন্যান্যরা ও জানতে পারবে।
আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের সভাপতি পদ প্রত্যাশী শাওন ভূঁইয়া জানান, আমাদের অহংকার হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে আরো নতুন কিছু জানবো পরীক্ষা দেবো এ যেন অন্য রকম অনুভূতি।
আমি পরিকল্পনা কারী আয়োজকদের ধন্যবাদ কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আখাউড়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক মো: শরীফুল ইসলাম এ সম্পর্কে
বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে বই পড়ে পরীক্ষা দিয়ে নেতা হওয়ার মতো বিষয়টি নিঃসন্দেহে একটি ভালো উদ্যোগ। এতে করে নতুন একটা চর্চা শুরু হবে। আমি চাই এর পাশাপাশি যাদের ছাত্রত্ব আছে ও মাদকমুক্ত সেই বিষয়টি যেনো নতুন নেতৃত্ব বাছাইয়ের ক্ষেত্রে নিশ্চিত করাহয়।
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. শাহবুদ্দিন বেগ শাপলু বলেন, আমরা সৃজনশীল পদ্ধতিতে লিখিত পরীক্ষা নিবো। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পরীক্ষার সময় সূচী জানিয়ে দেয়া হবে। পরিক্ষা পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি বলেন, লিখিত পরীক্ষার পাশাপাশি মৌখিকও নেয়া হবে। সব মিলিয়ে ৬০ নম্বরের পরীক্ষা হতে পারে। স্বচ্ছতার জন্য আমরা এ বিষয়ে কঠোর থাকবো। আইনমন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে পরামর্শ করে আমরা সকল সিদ্ধান্ত নেবো।
আখাউড়া উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক ও সাবেক উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজল উদ্যোগটির ভূয়সি প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন, মাননীয় আইনমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী সারাদেশেই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত। এতে করে নতুন নেতৃত্ব তৈরির ক্ষেত্রে দৃষ্টান্ত স্থাপিত হবে। পাশাপাশি যোগ্য নেতৃত্ব বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সহায়ক হবে।