প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘খন্দকার মোশতাকের নির্দেশে জাতীয় চার নেতাকে হত্যা করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় কারাগারে অস্ত্র নিয়ে ঢোকা যায় না। কিন্তু, তারা অস্ত্র নিয়ে ঢুকেছিল। গণভবন থেকে সেই নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, যেভাবে ঢুকতে চায়, সেভাবেই যেন ঢুকতে দেয়া হয়।’
রোববার বিকালে জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় কৃষিবিদ ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে তিনি এ সব কথা বলেন।
বিএনপির সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘৭১ সালে পাকিস্তানি বাহিনী যে ঘটনা ঘটিয়েছে ২০০১ সালে সে ঘটনা আবারও হয়েছিল। দুর্নীতিতে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। মানুষের ওপর অত্যাচার হয়েছে। দীর্ঘ সময় দেশের সেবা করতে পেরেছি বলে দেশে উন্নয়ন হয়েছে। মৃত ব্যক্তিকেও খালেদা জিয়া প্রমোশন দিয়েছেন। এ সময় তিনি ৬৩ জেলায় বোমা হামলার কথা উল্লেখ করে বলেন, সারা বাংলাদেশে বোমাহামলা হলেও একটি মাত্র জেলা মুন্সীগঞ্জে বোমা হামলা হয়নি। এমনকি গোপালগঞ্জেও বোমাহামলা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপির অবরোধ এখনও বহাল, তারা এখনও উঠায়নি। হরতাল দিয়েছে, অগ্নি সংযোগ করেছে, বাসে আগুন দিয়েছে, লঞ্চে আগুন দিয়েছে। এসব হামলায় অনেক মানুষ মারা গিয়েছে।
খালেদা জিয়াকে দেখে অনেকের মায়াকান্না। আমরা যারা ‘৭৫ সাল থেকে স্বজন হারা বেদনা নিয়ে আছি আমাদের জন্য কি মায়া লাগে না।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। জাতির পিতা এবং চার জাতীয় নেতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের অংশহিসেবে রোববার সকাল ৭টায় ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান তিনি। এরপর সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন প্রধানমন্ত্রী। পরে, আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের আরেকটি শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন।
প্রধানমন্ত্রীর পর আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠন যুবলীগ, ছাত্রলীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, শ্রমিক লীগ, কৃষক লীগ, যুব মহিলা লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকেও জাতির পিতার প্রতিকৃতির বেদীতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু এবং জাতীয় চার নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়।
১৯৭৫ সালের এই দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাতের আঁধারে বঙ্গবন্ধুর খুনিচক্র নির্মমভাবে জাতীয় চার নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ও এএইচএম কামারুজ্জামানকে হত্যা করে। যারা বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব প্রদান করে জাতির জন্য বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলেন।