“অপূর্ণ ইচ্ছেগুলোর অপমৃত্যু”
………………………………………অনু
ইচ্ছে ছিল, হিমেল শীতের ভোরে কুয়াশার চাদর গায়ে উদ্দেশ্যহীন হেঁটে চলার
গভীর বনানীর খসে পড়া শুকনা পাতা মাড়িয়ে মর্মর ধবনিতে ধুসর প্রকৃতি দেখার।
ইচ্ছে ছিল, মেঘ মুক্ত বিশাল আকাশে নিজের কষ্টগুলো বিলিয়ে দেবার
কিংবা তপ্ত রোদে বিরাণ মাঠের বটের ছাড়া একটু শীতল হবার।
ইচ্ছে ছিল, নাটাই বিহীন ঘুড়ি হয়ে উড়বার নীল আকাশ ছুঁয়ে
কিংবা কাল বৈশাখীর ঝড়ো বাতাসে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে ধুলো মাটির গন্ধ নেবার।
ইচ্ছে ছিল, গোধুলীলগ্নে সাগড়পাড়ে একাকী বসে শেষ বিকেলের ক্লান্ত সূর্যটা দেখার
শর্ষে ক্ষেতে লুটোপুটি খেয়ে নিজেকে হলুদাভ বর্ণে বর্ণিল করাটা অধরাই রয়ে গেল।
ইচ্ছে ছিল, প্রেয়সির হাতে হাত রেখে রুপালী চাঁদের নিয়ন জোছনায় স্নান করার
কিংবা সবুজ বনের মেঠো পথে হাটবো আর হাসবো কথায় কথায় খিলখিলিয়ে।
ইচ্ছে ছিল, অগণিত কবিতা লেখার, যার অক্ষরে অক্ষরে থাকবে ভালবাসার ছোঁয়া, আবেগ আর অনুভূতি
গহীন অরণ্যের লাল, নীল প্রজাপতি আর ফড়িংদের সাথে একান্ত সময় কাটানো হয়তো আর কখনোই হবে না।
ইচ্ছে ছিল, শ্রাবণের অধোর ধারায় কাক ভেজা হয়ে মধ্য রাতে ঘরে ফেরার
কিংবা পাল তোলা নৌকায় উদ্দেশ্যহীন যাত্রায় নদীর কলকল শব্দে সারাটা দিন কাটিয়ে দেবার।
আমার রাজ্যে আমি এক অপূর্ণ রাজা হয়েই আছি আর থাকবো হয়তো
ইচ্ছেগুলো পূরণ হয়নি আর হয়তো হবেও না
মনের আকুতি আর ইচ্ছেরা ভাংগা কাঁচের মতই প্রতিনিয়ত ভাঙ্গে
ভাংগা কাঁচের টুকরোগুলো হৃদয়ে গভীর ক্ষতে সৃষ্টিতে ব্যস্ত
একান্ত মনের রাজ্যের প্রিয়জনেরা একাকী রেখেই চলে যায়
আমার ইচ্ছেগুলো মরা ফুলের পাঁপড়ির মতই খসে পড়ে
আসলে সব ইচ্ছেই কি পূরণ হয়? চাওয়াগুলো কি খুবিই কঠিন, অমূলক বা বন্দুর?
যান্ত্রিক পৃথিবীতে এমনভাবে প্রতিনিয়ত চলছে ইচ্ছে মরনের খেলা।