আবুল কালাম আজাদ, ঝিকরগাছা অফিস : দেখলেই মনে হবে প্রতিবন্ধী তবুও সারাদেশের সাথে তালমিলিয়ে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলা বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসদরের চলছে গুজবের নতুন আতঙ্ক ছেলেধরা রোহিঙ্গা। যার কারণে প্রতিবন্ধী কোন ব্যক্তিকে আমজনতা সামনে পাইলেই তাদের মনগড়া উক্তি ছেলেধরা রোহিঙ্গা বলেই দিচ্ছে গণধোলাই। আমজনতার মনোভাব হল কোন স্থান থেকে উকি মেরে তাদের টার্গেট অনুযায়ী গ্রামের মানুষের বাড়ি, হাটবাজারে শুকুনের ছোঁ মেরে বা হাত ছানি দিয়ে নিয়ে যাবে কোমলমতি শিশুদেরকে। স¤প্রতি বিভিন্ন গ্রাম থেকে শিশু অপহরণকারী সন্দেহে এবং রোহিঙ্গা মনেকরে বেশ কয়েকজন নারী-পুরুষকে গ্রামবাসী এলোপাতাড়ি মারধর বা গণধোলাই দিয়েছে বলে একাধিক তথ্য পাওয়া গেছে। কিন্তু এমন যদি হতো তাহলে প্রায় একসপ্তাহের মধ্যে উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভার মধ্যে হয়তবা কোন স্থান হতে একটি শিশুকে অপহরণ হয়েছে এমন কোন ঘটনার নজির নাই। তবুও ঝিকরগাছায় এই আতঙ্কে কোন গ্রামের ভিতরে ঢুকতে না অসহায় লোক বা ফকিরা। তাদের মনের মধ্যে একটাই আতঙ্ক বিরাজ করছে ‘যদি আমাদেরকে ছেলেধরা রোহিঙ্গা মনেকরে যদি গণধোলাই দেয়’ এই ভয়ে। বর্তমানে উপজেলা ও পৌর সদরে ছেলেধরা গুজব বিরাজ করছে। ছেলে ধরার আতঙ্কে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছে স্থানীয় গ্রামবাসী। কয়েকজনকে ছেলে ধরা হিসেবে সন্দেহ করে ধনধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয় জনগণ। তবে বিষয়টি গুজব বলে প্রমাণিত হয়েছে। কোন সুবিধাবাদী মহল ছেলেধরা রোহিঙ্গা নামক গুজব ছড়িয়ে ফায়দা হাসিল করতে চাচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে এসবের কোন সত্যতা নেই দাবি করে, ঝিকরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ মো: আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বিভিন্ন স্থানে এসব মস্তিস্ক বিকৃত প্রতিবন্ধী লোক দেখে গ্রামবাসী শিশু অপহরণকারী ভেবে আটকিয়ে থানায় খবর দিচ্ছে। কিন্তু আমরা এপর্যন্ত যে কয় জনকে থানায় এনেছি তাদের সবাইকে দেখা গেছে প্রতিবন্ধী ব্যক্তি কেউ ঠিক করে কথা বলতে পারে না। তাদের কথায় কিছুটা ভারতীয় টান আছে বলে আমার মনে হয়।
এছাড়াও ওসি ঝিকরগাছা নামের একটি ফেসবুক পেজে বৃহস্পতিবার রাতে জনসচেতন মূলক একটি পোষ্ট দেওয়া হয়েছে। সেটা হল- স¤প্রতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে কতিপয় লোক শিশু পাচারকারী/ রোহিঙ্গা বলে অভিহিত করে মানুষিক ভারসম্যহীন অজ্ঞাতনামাদের মারপিট করে এলাকায় গুজব সৃষ্টি সহ সাধারন জনমনে ভীতি প্রদান করছে। শিশু পাচারকারী দলের সদস্য আটক হয়েছে মর্মে তথ্যের ভিত্তিতে ঝিকরগাছা থানা পুলিশ তাৎক্ষনিক ঘটনাস্থলে হাজির হয়ে বিষয়টি সম্পর্কে উপস্থিত স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তি সহ আটককৃত ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার কোন সত্যতা পাওয়া যায় নাই এবং শিশু পাচার হয়েছে মর্মে কোন ব্যক্তি লিখিত কিংবা মৌখিক অভিযোগ প্রদান করে নাই। কতিপয় ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ বিভিন্ন মাধ্যমে গুজব সৃষ্টিকরে অহেতুক জনমনে ভীতি সৃষ্টি করছে। সঠিক তথ্য প্রমান ব্যতিত গুজব সৃষ্টি না করে ঘটনা সংক্রান্তে কোন ব্যক্তির অভিযোগ থাকলে অভিযোগ দায়ের করার জন্য বিশেষ ভাবে অনুরোধ করা হলো। অভিযোগ প্রাপ্তির সাথে সাথে তাৎক্ষনিক বিধি মোতাবেক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। থানা এলাকার সার্বিক আইন শৃংখলার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে ঝিকরগাছা থানা পুলিশকে সহযোগিতা করার জন্য সর্বসাধারণকে আহব্বান করেছেন অফিসার ইনচার্জ।
এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: জাহিদুল ইসলাম বলেন, গুজবে কোন প্রকার কান দিবেন না। যদি আপনাদের কোন প্রকার সন্দেহ হয় তাহলে উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে অবহতি করুন। তাহলে আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবো। তবে আপনারা কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিবেন না
দেখলেই মনে হবে প্রতিবন্ধী তবুও ঝিকরগাছায় নতুন গুজবের নাম ছেলেধরা রোহিঙ্গা.
http://www.71news24.com/2019/03/18/1128
Please follow and like us: