কামাল হোসেন, একাত্তর নিউজ ২৪:
যশোর জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ছাত্রলীগ-যুবলীগের সাবেক ও ত্যাগী নেতারা পদ বঞ্চিত হয়েছেন। কমিটি পুনর্বিন্যাস করে ত্যাগী নেতাদের পদায়নের দাবি জানানো হয়েছে।
আজ ৯আগস্ট সোমবার প্রেস ক্লাব যশোর মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলন এ দাবি জানান জেলা যুবলীগের বর্তমান নেতা ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন। তার দাবি, সংবাদ সম্মেলনের অভিযোগ সঠিক নয়। সংবাদ সম্মেলন করেছেন যুবলীগের দুই নেতা। তারা জেলা যুবলীগের দায়িত্বশীল পদে আছেন। এজন্য তাদের জেলা কমিটিতে পদ দেয়া হয়নি।
তিনি বলেন, দলের ত্যাগী নেতাদেরই জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে পদ দেয়া হয়েছে। যশোরে থাকেন না যাদের বলা হচ্ছে- তারা এক সময় ইউনিয়ন পর্যায়ে রাজনীতি করেছেন। পরবর্তীতে যশোরের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। এখন ঢাকায় থাকলেও যশোরে নিয়মিত আসেন, দলীয় নানা কর্মসূচিতে অংশ নেন। দলের ত্যাগী নেতার সন্তানদের কমিটিতে স্থান দেয়া হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি সৈয়দ মেহেদী হাসান অভিযোগ করেন, সম্মেলনের ২০ মাস পর যশোর জেলা আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ওই কমিটিতে তৎকালীন ছাত্র ও যুব নেতাদের যথাযথ মূল্যায়ন করা হয়নি। অনুপ্রবেশকারীরা অনৈতিকভাবে জেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতে স্থান পেয়েছে। এজন্য আমরা শোকের মাসে সংবাদ সম্মেলন করতে বাধ্য হয়েছি।
লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, ২০১৯ সালের ২৭ নভেম্বর যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলনকে সভাপতি ও শাহীন চাকলাদার এমপিকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। ওই দিন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এমপি ২২ সদস্যের যশোর জেলা আওয়ামী লীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করেন।
২০ মাস পর (চলতি বছরের ৩০ জুলাই) জেলা আওয়ামী লীগের ৭৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়। কমিটিতে ত্যাগী নেতাদের মূল্যায়নের কথা থাকলেও উল্টো হয়েছে। যশোরে থাকেন না বা রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্ক নেই এমন অনেকেই কমিটিতে স্থান পেয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, আবার অনেকে বিএনপি জামায়াত পরিবারের সদস্য হয়েও অনৈতিকভাবে কমিটিতে স্থান পেয়েছেন। তারা হলেন- বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে আশরাফুল কবির বিপুল ফারাজী, কোষাধ্যক্ষ পদে মঈনুল আলম টুলু, উপ-দপ্তর সম্পাদক ওহিদুল ইসলাম তরফদার,সদস্য পদে অধ্যাপক মোয়াজ্জেম হোসেন, অমিত কুমার বসু, মশিউর রহমান সাগর, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ পারভেজ, আলামুন ইসলাম পিপুল, দেলোয়ার হোসেন দীপু, সামির ইসলাম পিয়াস, সাইফুদ্দিন সাইফ ও গোলাম মোস্তফা।
লিখিত বক্তব্যে আরও বলা হয়, মেহেদী হাসান মিন্টু সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রার্থী ছিলেন। তিনি পরাজিত হন। অনৈতিকভাবে তাকে জেলা কমিটির সহ-সভাপতি করা হয়েছে। লুৎফুল কবীর বিজু শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী ছিলেন। তিনিও পরাজিত হন। তাকে অনৈতিকভাবে জেলা আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক দেয়া হয়েছে। আবার দীর্ঘ প্রায় ২০ বছর শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট আবুল হোসেন। তাকে জেলা কমিটিতে পদ দেয়া হয়নি। তার মতো অনেক ত্যাগী ও রাজপথে পরীক্ষিত ছাত্র ও যুব নেতারা পদবঞ্চিত হয়েছে। তাদের কমিটিতে না রেখে তাদের সারা জীবনের রাজনীতির কবর রচনা করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- জেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন, আজহার হোসেন স্বপন, দপ্তর সম্পাদক হাফিজুর রহমান, যুবলীগ নেতা কামরুজ্জামান চৌধুরী, মারুফ হোসেন বিপুল, শেখ নেছার আহমেদ, আসাদুজ্জামান আসাদ, প্রদীপ রায়, আমিরুল ইসলাম দুঃখী, শান-ই-শাকিলা আফরোজ এ্যানী।