একাত্তর নিউজ ডেস্ক :
যশোর-৫ (মণিরামপুর) আসনের সংসদ সদস্য এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের এলজিআরডি মন্ত্রনালয়ের পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্যরে এপিএস কবির খানের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন মারপিটের অভিযোগ। মণিরামপুর থানায় অভিযোগকারী উপজেলার রাজবাড়ীয়া গ্রামের শহিদুল ইসলামের পুত্র ও স্থানীয় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নাজমা খানমের তথাকথিত ব্যক্তিগত কর্মকর্তা বা স্বঘোষিত চেয়ারম্যানের পিএস মোঃ মনিরুল ইসলাম নয়ন। এ ঘটনায় স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতৃবৃন্দের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া, সর্বত্র নিন্দার ঝড়।
সূত্রে জানাযায়, গত ২২ জুলাই বুধবার মণিরামপুর উপজেলা পরিষদের মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় ( সাধারণ) ও আইন শৃংখলা কমিটির নিয়মিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। উভয় সভায় স্থানীয় সংসদ সদস্য ও এলজিআরডি মন্ত্রনালয়ের পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য সভার প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। যথারীতি নিয়মানুযায়ী প্রথমে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নাজমা খানমের সভাপতিত্বে মাসিক উন্নয়ন সমন্বয় (সাধারণ) সভা সমাপ্ত হয়। পরবর্তীতে মণিরামপুরে সদ্য যোগদানকৃত উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ জাকির হাসানের সভাপতিত্বে আইন শৃংখলা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হবার পূর্ব মূহুর্তে সভার সভাপতি নির্বাহী অফিসার সৈয়দ জাকির হাসান-আইন শৃংখলা কমিটির সদস্য ছাড়া সবাইকে সভাস্থল ত্যাগ করার অনুরোধ জানান। প্রধান অতিথি প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য (এমপি) মহোদ্বয়-এ যুক্তিতে সমর্থন করেন। এ প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে উপজেলা প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তা ও স্থানীয় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা সভাস্থল ত্যাগ করলেও-আইন শৃংখলা সভার নিয়মনীতি, নির্বাহী অফিসার ও প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য্য মহোদ্বয়ের অনুরোধকে তোয়াক্কা না করে, তাদের অনুরোধকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানমের তথাকথিত ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম নয়ন-প্রতিমন্ত্রীর চেয়ারের পিছনে ঘুরঘুর করতে থাকে। তখন নিরাপত্তার সার্থে এপিএস কবির খান প্রতিমন্ত্রী ও উপস্থিত অন্যান্যদের নিরাপত্তার সার্থে সেখানে উপস্থিত আইনশৃংখলা বাহিনীর সদর্স্যদের সহায়তায় নয়নকে সভাস্থল থেকে সরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় মনিরুল রাগন্বিত হয়ে কবির খানকে হুমকি দিতে থাকে। নয়নের এ আচরনে বাইরে দাড়িয়ে থাকা স্থানীয় উপজেলা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ প্রতিবাদ করে। নয়ন তাদের সাথেও দূর্ব্যবহার করে। এ সময়ে ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীদের সাথে-নয়নের বাকবিতন্ডা হয়। আওয়ামীগের নেতৃবৃন্দরা বিষয়টি এগিয়ে এসে উভয়কে শান্ত করে দ্য়ে। বিষয়টি সেখানেই শেষ হয়ে যায়।
কিন্তু উপজেলা চেয়ারম্যানের স্বঘোষিত তথাকথিত ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম নয়ন তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ, মারপিটসহ তার কাছে থাকা উপজেলা চেয়ারম্যানের মূল্যবান কাগজপত্র ছিনিয়ে নেয়া, টানা-হেচড়া করে হল রুম থেকে বাইরে বের করে আনাসহ কাছে থাকা ২০ হাজার টাকার একটি মোবাইল ফোন, পকেটে থাকা উপজেলা চেয়ারম্যানের ১০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়াসহ ছুরি-চাকু বের করে তাকে মারতে উদ্যত হয়-এ মর্মে ভিত্তিহীন কিছু অভিাগযোগ এনে পরের দিন মঙ্গলবার সকালে প্রতিমন্ত্রীর এপিএস কবির খান (৩৮)সহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মণিরামপুর থানায় একটি অভিযোগ দ্বায়ের করে। অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেন থানার ডিউটি অফিসার এসআই সমেন কুমার। অভিযোগের আলোকে অন্যান্য আসামীরা হলো বিল্লাল (৩৪), আলমগীর (৩২), জাহাঙ্গীর ( ৪০), ইলিয়াস (২৪), রমেশ দেবনাথ (২০), সোহাগ (৩৫) এবং উত্তম দে (৪০)।
এ বিষয় জানতে চাইলে উপজেলা প্রতিমন্ত্রীর এপিএস কবির খান বলেন, আমাদের পরিবারের প্রতি ঈষান্বিত হয়ে একটি কুচক্রি মহল আমার বিরুদ্ধে এমন একটি মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করেছে যে,আমার ভাই অ্যাড. বছির আহম্মেদ খান উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি, জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতিসহ দীর্ঘদিন যাবৎ দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। আমি নিজে উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহবায়কের দায়িত্ব পালন করেছি। আমার পরিবারের কোন সদস্যের বিরুদ্ধে অদ্যবধি কোথাও কোন অভিযোগ কেউ দেখাতে পারবে না। হঠাৎ এখন একজন আমার বিরুদ্ধে এমন একটি অভিযোগ এনেছে-এটা দুঃখজনক।
জানতে চাইলে মণিরামপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও আইন শৃংখলা কমিটির গুরুত্বপূর্ণ সদস্য জিএম মজিদ বলেন, সভার সভাপতি নির্বাহী অফিসারের নির্দেশ অমান্য করে উপজেলা চেয়ারম্যানের তথাকথিত ব্যাক্তিগত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম নয়ন নামের ওই ছেলে মাননীয় প্রতিমন্ত্রীর পিছনে ঘুরা ঘুরির করার কারণে এপিএস কবির খান মন্ত্রীর গানম্যানের সহায়তায় তাকে সেখান থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন। এখানে কোন মারপিটের ঘটনা আদৌ ঘটেনি।
আইন শৃংখলা কমিটির সদস্য উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক উত্তম চক্রবর্তী বাচ্চু ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কাজী জলি আক্তার একই বক্তব্য প্রদান করেন যে, মন্ত্রীর নিরাপত্তার সার্থে নয়নকে এপিএস কবির খান গানম্যানের সহায়তায় মন্ত্রীর পিছন থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন এবং সেখানে কোন ধরণের কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলে স্বীকার করেন।
মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বনোয়াট এ অভিযোগের কারণে উপজেলা আওয়ামীলীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের ভিতর মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ভিত্তিহীন এ অভিযোগ দায়ের করায়-উপজেলা রাজনৈতিক অঙ্গন, ব্যবসায়ী মহল, সাধারণ জনতাসহ সর্বত্র নিন্দার ঝড় বয়ে যাচ্ছে।
নুুুুরুল হক/একাত্তর নিউজ২৪