জুয়েল রানা আব্বাসী, মনিরামপুর প্রতিনিধি : যশোরের মনিরামপুরে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসীর অবরুদ্ধ করে রাখা সন্ত্রাসীদের পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করার অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট থানার কয়েকজন পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে।
এসআই আবদুর রাজ্জাকের নেতৃত্বে টহল পুলিশের একটি দল এ ঘটনা ঘটিয়েছে। হায়দার আলী, বিল্লাল হোসেন ও মনির হোসেনকে মোটরসাইকেলে পালিয়ে যেতে সহায়তা করেন তারা। এই তিনজন পৌরশহরের চালের বাজারের ইজারাদার।
জানা যায়, রোববার মনিরামপুর পৌরশহরে সকাল ১১টার দিকে বেপারী অটোরাইস মিলের মালিক আবদুস সালামের জামাতা ও ছেলের ওপর হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। তাদের মারধর করে সাড়ে তিন লাখের বেশি টাকা ছিনিয়ে নেয়। পালানোর সময় মিলের শ্রমিকসহ এলাকাবাসী ধাওয়া দিয়ে তিন সন্ত্রাসীকে চারপাশ থেকে অবরুদ্ধ করে রাখে। তাদের পালিয়ে যেতে সহায়তা করে পুলিশ। এর প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ এলাকাবাসী মনিরামপুরে যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়ক প্রায় দুই ঘণ্টা অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। দুপুর ১টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিলেও পুরো এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
আবদুস সালাম ও তার জামাতা গোলাম মোস্তফা জানান, অবরুদ্ধ তিন সন্ত্রাসীকে আটকের জন্য বারবার অনুরোধ করা হলেও পুলিশ তাদের কথা শোনেনি। প্রত্যক্ষদর্শীদেরও অভিযোগ, অবরুদ্ধ সন্ত্রাসীদের মোটরসাইকেলে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করেন এসআই আবদুর রাজ্জাক ও তার সঙ্গীরা।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দক্ষিণ পাশে হরিহর নদীর তীরে অবস্থিত মেসার্স বেপারী অটোরাইস মিল। এর মালিক জানান, কয়েক মাস ধরে এলাকার রুবেল, হায়দার, মনিরসহ বেশ কয়েকজন সন্ত্রাসী তার কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছে। তিনি চাঁদা দিতে রাজি হননি। বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের জন্য রোববার সকাল ১১টার দিকে তার ছেলে রনি ও জামাতা তিন লাখ ৬৪ হাজার চারশ টাকা নিয়ে মিলের গেটের সামনে পৌঁছলে রুবেল, হায়দার, মনির, বিল্লালসহ ৯-১০ জন সন্ত্রাসী মোটরসাইকেলে এসে অস্ত্র ও রড দিয়ে তাদের ওপর হামলা চালায়। টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করার সময় ধাওয়া দিয়ে তাদের মধ্যে তিনজনকে ব্রিজের কাছে চারপাশ থেকে অবরুদ্ধ করে এলাকাবাসী। এ সময় এসআই আবদুর রাজ্জাক ও সহযোগীরা ঘটনাস্থলে হাজির হন।
স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর বাবুল আকতার উল্টো দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, পৌরশহরের চালের বাজারের ইজারাদার হায়দার আলী, বিল্লাল হোসেন ও মনির হোসেন মেসার্স বেপারী অটোরাইস মিলের মালিক আবদুস সালামের কাছে খাজনা দাবি করেছিলেন। খাজনা পরিশোধ করাকে কেন্দ্র করে এই অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে।
আবদুস সালাম কাউন্সিলর বাবুল আকতারের দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছেন, চালের বাজার থেকে তার অটোরাইস মিলের দূরত্ব দুই কিলোমিটার। তা ছাড়া অটোরাইস মিল একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান, খাজনা দেওয়ার কোনো কারণ নেই।
মনিরামপুর থানার ওসি (সার্বিক) নূর-ই আলম সিদ্দিকী জানান, এ ব্যাপারে এখনও কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। তবে মিল মালিক এলাকাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে মামলা করবেন বলে জানতে পেরেছি।