একাত্তর ডেস্ক : আজ শনিবার দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে রাজধানরীর স্কয়ার হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন।
(ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)
তার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন তার কন্যা সোহেলা সামাদ কাকলী।
এদিকে শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খান
জানান, ‘দীর্ঘদিন ধরেই নানা অসুখে ভুগছিলেন বরেণ্য এই অভিনেতা।
সম্প্রতি শরীর বেশি খারাপ হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।
এখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ ৬ এপ্রিল তার মৃত্যু হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় অভিনেতা টেলি
সামাদকে এর আগে ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রে বাইপাস
সার্জারি করা হয়।
এ ছাড়া গত বছরের ২০ অক্টোবর তার বাঁ পায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলিতেও জরুরি অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল।
সর্বশেষ গেল বছরের ৪ ডিসেম্বর অসুস্থ হয়ে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন টেলি সামাদ।
তখন ডাক্তার বলেছিলেন, টেলি সামাদের খাদ্য নালীতে
সমস্যা রয়েছে।
শুধু তাই নয়, তার বুকে ইনফেকশন ছিল, ডায়াবেটিস ছিল।
রক্তের প্লাটিলেটও কমে যাচ্ছিলো বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক।
সেখানে ১৬ দিন চিকিৎসা নেওয়া পর বাসায় ফিরে আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।
এরপর তাকে গত ১৯ ডিসেম্বর রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।
সে যাত্রাতেও সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরেন তিনি।
কিন্তু হঠাৎ করেই কয়েকদিন আগে আবারও অসুস্থ
হয়ে পড়েন টেলি সামাদ।
পরে তাকে স্কয়ার হাসপাতালে আনা হয়।
এখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেলেন তিনি।
উল্লেখ্য, টেলিসামাদ ১৯৪৫ সালের ৮ জানুয়ারী
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার নয়াগাঁও গ্রামে
জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা থেকে উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করেন।
তার বড় ভাই চারুশিল্পী আব্দুল হাই।
চলচ্চিত্র জীবনঃ
১৯৭৩ সালে ‘কার বউ’ চলচ্চিত্রে কৌতুক অভিনয়ের
মাধ্যমে চলচ্চিত্র জগতে প্রবেশ করেন।
‘নয়নমণি’ ও ‘পায়ে চলার পথ’-এর মত চলচ্চিত্রের মাধ্যমে দর্শকপ্রিয়তা লাভ করেন।
‘মনা পাগলা’ চলচ্চিত্রে সঙ্গীত পরিচালনার পাশাপাশি ৫০টির মত চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দেন।
অভিনয়জীবনে চার দশকে ৬০০ চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন।
বাংলাদেশ টেলিভিশনের ক্যামেরাম্যান মোস্তফা মামুন
তার ডাক নাম দিয়েছিলেন টেলিসামাদ।
তারপর থেকে তিনি এ নামেই পরিচিত হন।
২০১৫ সালে তার অভিনীত সর্বশেষ চলচ্চিত্র ‘জিরো ডিগ্রী’ মুক্তি পায়।
তার অভিনিত চলচ্চিত্র তালিকাঃ
জিরো ডিগ্রী (২০১৫), কুমারী মা (২০১৩), সাথী হারা
নাগিন (২০১১), মায়ের চোখ (২০১০), আমার স্বপ্ন
আমার সংসার (২০১০), রিকসাওয়ালার ছেলে (২০১০), মন বসে না পড়ার টেবিলে (২০০৯), কাজের মানুষ (২০০৯), মায়ের হাতে বেহেস্তের চাবি (২০০৯), কে আমি
(২০০৯) – হাশেম, কেয়ামত থেকে কেয়ামত (১৯৯৩), মিস লোলিতা (১৯৮৫), নতুন বউ (১৯৮৩), মাটির ঘর (১৯৭৯), নাগরদোলা (১৯৭৯), গোলাপী এখন ট্রেনে (১৯৭৮), অশিক্ষিত (১৯৭৮), জয় পরাজয় (১৯৭৬), গুন্ডা (১৯৭৬), সুজন সখী (১৯৭৫), চাষীর মেয়ে (১৯৭৫), রঙিন রূপবান, ভাত দে।
সুত্র : শেখ গফফার রহমানের ফেসবুক ওয়াল।