একাত্তর ডেস্ক : মাছের খামারের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করে একটি আইনের খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। আইনে বিভিন্ন অপরাধের জন্য শাস্তিও বাড়ানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার (১৮ মার্চ) মন্ত্রিসভার বৈঠকে মৎস্য ও মৎস্যপণ্য (পরিদর্শন ও মাননিয়ন্ত্রণ) আইন, ২০১৯, এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
পরে সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম ব্রিফিংয়ে বলেন, মান নিয়ন্ত্রণ করার জন্য এই আইন করা হচ্ছে। ১৯৮৩ সালের একটি অধ্যাদেশ দিয়ে চলছিল। উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে সামরিক শাসনামলে প্রণীত আইনগুলোকে নতুন করে বাংলায় করা হচ্ছে।
মৎস্যের সংজ্ঞায় বলা হয়েছে, সকল প্রকার কোমল ও কঠিন অস্থি বিশিষ্ট মৎস্য, সাদু ও লবণাক্ত পানির চিংড়ি, উভচর জলজপ্রাণী, কাকড়া জাতীয় প্রাণী, শামুক, ঝিনুক, ব্যাঙ এবং এসব জলজপ্রাণীর জীবন্ত কোষকে মৎস্য হিসেবে গণ্য করা হবে।
তিনি বলেন, মাছ রপ্তানিতে নানান রকম সমস্য হয় কোয়ালিটি নিয়ে। এজন্য আইনকে হালনাগাদ করা হয়েছে।
‘মৎস্য ও মৎস্যপণ্যে ভেজাল, অপদ্রব্যের মিশ্রণ ও অনুপ্রবেশ করানো এবং ক্ষতিকারক রাসায়নিক নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আগে আমাদের উদাহরণ আছে চিংড়ির ওজন বাড়ানোর জন্য পেরেক ঢুকানো হয়েছে বা জেলি বা সাগু তরল করে ঢোকানো হয়েছে, এগুলো আমাদের জন্য খুব অমর্যাদার, এগুলো যাতে না করতে পারে সেজন্য আইনে বিধান রাখা হয়েছে।’
তিনি বলেন, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার কাছ থেকে মৎস্যপণ্য যে স্বাস্থ্যকর সেই সনদ ছাড়া মৎস্য ও মৎস্যপণ্য রপ্তানি করা যাবে না।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নিরাপদ মৎস্য উৎপাদন নিশ্চিত করতে মৎস্য খামার স্থানীয় উপযুক্ত পদ্ধতিতে নিবন্ধন করতে হবে। মৎস্য খামার চালাতে গেলে নিবন্ধন লাগবে। খামার পর্যায়ে ব্যবহার নিষিদ্ধ ওষুধ ও রাসায়নিক দ্রব্যাদি ব্যবহার করা যাবে না।
তিনি বলেন, মৎস্য ও মৎস্যপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানায় ফ্রেশ মাছ প্রক্রিয়া করতে হবে। পচা, দূষিত, ভেজাল ও অপদ্রব্য মিশ্রিত মৎস্য ও মৎস্যপণ্য বাজারজাত করা যাবে না।
‘এসব পণ্য বাজারজাত করলে দুই বছর কারাদণ্ড বা পাঁচ লাখ টাকা জরিমানা করা হবে। আগে এই অপরাধের জন্য তিন মাস জেল, পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেয়া হতো,’ যোগ করেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
মোহাম্মদ শফিউল আলম বলেন, আইন অমান্য করলে ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, পরিদর্শক বা পরিদর্শনকারী কর্মকর্তা কোনো ব্যক্তিকে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত প্রশাসনিক জরিমানা করতে পারবেন। দ্বিতীয় দফায় একই অপরাধ করলে সাজা দ্বিগুণ হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নির্ধারিত পদ্ধতিতে লাইসেন্স না নিয়ে মানুষের খাদ্য হিসেব মৎস্য ও মৎস্যপণ্য আমদানি করা যাবে না।
তবে সরকার প্রয়োজনে গেজেট প্রজ্ঞাপন দিয়ে নির্ধারিত মৎস্য ও মৎস্যপণ্য আমদানি করার এক বা একাধিক শর্ত থেকে অব্যাহতি দিতে পারবে বলে জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
সূত্র : আধুনিক কৃষি খামার।