আবুল কালাম আজাদ, ঝিকরগাছা (যশোর) অফিস : যশোরের ঝিকরগাছায় বিনা টাকায় পুলিশের চাকরি হয়েছে ১৯টি পরিবারের সন্তানের। এ সব পরিবারগুলো অধিকাংশ দরিদ্র্য ও অসহায়। ফলে এদের কাছে পুলিশের চাকরি পাওয়া ছিল অনকটা সোনার হরিণের মতো। কিন্তু চাকরিতে কোন টাকা না লাগায় পরিবারগুলো সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। মাত্র ১০৩টাকায় পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি পেয়েছেন পোস্য কোটায় ২টি, কৃষক ৮টি, প্রবাসী ২টি, ব্যবসায়ী ২টি, চাকুরিজীবী ১টি, মটর শ্রমিক ১টি, গার্মেন্টস শ্রমিক ১টি, সবজী বিক্রেতা ১টি ও সেলুন কর্মচারী ১টিসহ মোট ১৯টি পরিবারের সদস্যরা। শুধুমাত্র মেধার উপর ভিত্তি করে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশনিয়ে অর্জিত হলো টাকাবিহিন সোনার হরিণ নামক সরকারি চাকরী তাও আবার পুলিশে। বর্তমান সময়ে যেখানে ঘুষের টাকা না হলে চাকরী নামক সোনার হরিণ পাওয়া যায় না ঠিক সেই মুহূত্বে অবাক হলেও দেশের প্রধানমন্ত্রীর এই অবদানকে কেউই অস্বিকার করতে পারবে না।
ঝিকরগাছা উপজেলার ১৯টি অসহায় পরিবারের সন্তানেরা হল, পুলিশ পোষ্য কোটায় নায়রা গ্রামের আসাদুজ্জামানের ছেলে মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ও বোধখানা গ্রামের ইসরাফিল হোসেনের ছেলে ইমরান হোসেন, সাধারণ কোটায় কৃষ্ণনগর গ্রামের শরিফুল ইসলামের ছেলে আরাফাত হোসেন শান্ত, চান্দা গ্রামের মাহবুবুর রহমানের ছেলে আনোয়ার হোসেন রানা, বামনআলী চাঁপাতলা গ্রামের মীর বাবু ছেলে মীর সাকিব, বেলে বটতলা গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে আলিফ হাসান, পুরন্দরপুর সরদার পাড়া গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে সাহেব আলি, বহিরামপুর গ্রামের শরিফুল ইসলামের ছেলে সজল হোসেন, উজ্জলপুর গ্রামের সরাজ উদ্দিনের ছেলে সুজন হোসেন, শরীফপুর গ্রামের কাশেম আলীর ছেলে আবুল বাশার, পারবাজার গ্রামের নুরুজ্জামানের ছেলে তহুরুজ্জামান, কীর্তিপুর গ্রামের জাকির হোসেনের ছেলে রায়হান হোসেন, হাড়িয়াদেয়াড়া গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলে খালিদ হাসান, ঢাকাপাড়া গ্রামের আলমগীরের ছেলে ইমরান হোসেন, কায়েমকোলা গ্রামের আমজাদ হোসেনের ছেলে আশানুর রহমান, উলাকোল গ্রামের আব্দুল আজিজের ছেলে সোহেল জুবায়ের, ঘোড়াদহ গ্রামের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে সৌরভ আলম ও নারী সাধারণ কোটায় উজ্জলপুর গ্রামের আব্দুল আজিজের মেয়ে মারুফা আক্তার লাকী, উত্তররাজাপুর গ্রামের মতিয়ার রহমানের মেয়ে তানজিলা খাতুন।
এছাড়াও যশোর জেলার ৮টি উপজেলা থেকে কৃষক, দিনমজুর, সেলুন কর্মচারী, রিক্সাচালকের ছেলে-মেয়েরা পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকুরি পেয়েছেন। সম্প্রতি, ২২জুন হতে ২৬জুন পর্যন্ত ট্রেইন রিক্রুট কনস্টেবল পদে সাধারণ কোটা পুরুষ ১৬০৬জন ও নারী ১৯৩জন, মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুরুষ ৯৯জন ও নারী ১৫জন, পুলিশ পোষ্য কোটায় ২৫জন, আনসার-ভিডিপি ৫জন, এতিম কোটা ৭জনসহ সর্বমোট ১হাজার ৯শ ৫০জন শারীরিক পরিক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। যার মধ্যে শারীরিক পরিক্ষায় উত্তীর্ণ হন ১হাজার ৬৯জন। পরবর্তীতে গত ২৭জুন লিখিত ও মৌখিক পরিক্ষায় ৩শ ৫৪জন উত্তীর্ণ হন। এর মধ্যে সাধারণ কোটায় পুরুষ ১শ ৩৬জন ও নারী ৬০জন, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় পুরুষ ২১জন ও নারী ২জন এবং পুলিশ পোষ্য কোটায় ৪জন পুরুষ তাদের যোগ্যতার ভিত্তিতে বিনা টাকায় প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত হন।
ঘুষ বা টাকাবিহিন ছেলের চাকরী পাওয়ার খবরে আনন্দিত হয়ে দরিদ্র অসহায় পিতামাতারা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা , যশোর জেলার পুলিশ সুপার বিপিএম(বার) পিপিএম মঈনুল হক ও ঝিকরগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ মো: আব্দুর রাজ্জাকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
এছাড়াও যশোর জেলার পুলিশ সুপার বিপিএম(বার) পিপিএম মঈনুল হকের পক্ষে থানার অফিসার ইনচার্জ মো: আব্দুর রাজ্জাক, ওসি তদন্ত শেখ আবু হেনা মিলন, এসআই নজরুল ইসলাম সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত কন্সটেবলদের বাড়িতে গিয়ে ফুলেল শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেছেন।