জি এম অভি, যশোর অফিস : হেমন্তের শেষে যখন তীব্র শীত আসে তখন হতদরিদ্র শীতার্ত মানুষগুলোর জীবন হয়ে ওঠে ভয়ঙ্কর কষ্টের। সুবিধাবঞ্চিত শীতার্ত মানুষেরা একটা গরম কাপড়ের জন্য অন্যের দ্বারে দ্বারে ঘোরাঘুরি ছোটাছুটি করে থাকে। অনেকে মুখ ফুটে বলতে পারে না অসহায় দিনমুজুর যাদের নুন আন্তে পান্তা ফুরায়, নিজের পরিবার জন্য খাদ্য, বস্ত্র যোগার করতে হিমসিম খেতে হয়। তাদের জন্য শীত বস্ত্র কেনা স্বপ্নের মত। অনেকে আবার অন্যনের ওপর নির্ভশীল।
হাড় কাঁপানো শীতের কষ্টের কথা শীর্তাত মানুষগুলো নীরবে সহ্য করে থাকে। প্রতি বছরের মত হতদরিদ্র শীতার্তদের কথা মাথায় রেখে যশোরের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বন্ধনের উদ্যোগে মানবতার হাত স্থাপন করা হয়। গত ১২ ডিসেম্বর যশোর সদর উপজেলার পুলেরহাট বাজারে উন্মুক্ত মানবতার হাত উদ্বোধন করা হয়। উন্মুক্ত “মানবতার হাতে” লেখা আছে আপনার অপ্রয়োজনীয় বস্ত্র শীতবস্ত্রহীনদের জন্য এখানে দান করুন। শীতবস্ত্রহীনরা এখান থেকে গ্রহণ করুন। উদ্বোধনের পর থেকেই অনেক অসহায় এখানে ভিড় জমায়, যারা মুখ ফুটে বলতে পারে না তাদের শীতদায়ক আর্তনাদের কথা হয়তবা লজ্জায়। সহযোগিতার জন্য প্রতিনিয়ত দূর দুরার্ন্ত থেকে অনেকেই বন্ধনের এই মানবতার হাতে শীতবস্ত্র হ্যাঙ্গারে ঝুলিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। কিছু দিন পর থেকে সংগঠনটি দেখতে পায় যে, মানবতার হাতে দানকৃত যে শীতবস্ত্র পেয়েছে তা পর্যাপ্ত না।
অসহায় শীর্তাত মানুষগুলো প্রতি নিয়ত এখানে ভিড় জমাচ্ছে। এমনকি অনেক সময় শীতবস্ত্র না পেয়ে সংগঠনটির সদস্যদের খোজাখুজি করতে করতে তাদের বাসাবাড়িতে শীত বস্ত্রের জন্য যাচ্ছে। এমনবস্থায় বন্ধনের সদস্যদের সহযোগিতায় এবং বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে যশোর টাউন হল মাঠ থেকে শীতবস্তু কিনে মানবতার হাতে রাখা হয়। সেখান থেকে অনেকেই নিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত, অনেকে আবার চক্ষুলজ্জায় আসতে পারে না দিনের আলোতে। তারা আবার রাতের আঁধারেও নিয়ে যাচ্ছে শীতবস্তু।
এপর্যন্ত মানবতার হাত থেকে দুই শতাধীক শীতার্ত মানুষ পোশাক সংগ্রহ করেছেন। গত ১২ ডিসেম্বর বিকালে সংগঠনের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে “মানবতার হাত” কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন।
এসময় জাহিদ হাসান টুকুন বলেন, বন্ধনের এই সামাজিক আয়োজন শুধুমাত্র কাপড় চোপড়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে, রোগীর সেবা করা, ঔষধ বিতরণ করাসহ সামাজিক নানাবিধ সামাজিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে হবে। বন্ধনের মত এই ধরনের অনেক সংগঠন হওয়া উচিত এবং অসহায়দের পাশে দাড়ানো উচিত। বন্ধনের কার্যক্রম শুধুমাত্র এই এলাকায় সীমাবদ্ধ না রেখে শহরের বিভিন্ন জায়গায় বা শহরের বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে এমন কার্যক্রমের জন্য সাহায্য নিয়ে মানুষের সেবা করা সম্ভব। এর জন্য দরকার উদ্যোগের।
আর এই উদ্যোগ নিতে পারে এই সময়ের যুব সমাজ। যুব সমাজ সংগঠিক হও ও ভালো কাজ করো। এবং খারাপ কাজের সাথে না জড়িয়ে ভালো কাজের সাথে থাকো। এই কাজে নিজের আত্মার তৃপ্তি পাওয়া যায় এবং মানুষের অনেক উপকার হয়।