একাত্তর নিউজ ডেস্ক :
আজ সু-প্রভাত নয় । আজ রক্তের অক্ষরে লেখা একটি কালো সকাল, আজকের প্রভাত অন্ধকারের, আজকের প্রভাত জাতির জনকের রক্তে ভেজা, আজকের প্রভাত ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্তে ভেজা ও অসংখ্য মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত মহান স্বাধীনতার সূর্য কে অন্তিমিত করার চক্রান্তের সকাল, আজকের সকাল দেশ মাতৃকার অকুতোভয় সৈনিক-অসংখ্য বীর মুক্তিযোদ্ধা হত্যার সকাল, আজকের সকাল স্বাধীনতার মূল চার নীতিকে জলাঞ্জলি দেওয়ার সকাল, আজকের সকাল বাঙালি সংস্কৃতি ধ্বংসের সকাল, আজকের সকাল গণতন্ত্রকে করব দিয়ে সামরিক স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠার সকাল ।
আজকের সকাল পিতৃহারা, মাতৃহারা, ভাইহারা, নিকটজন্ হারা দুই শোকে বিহ্বল মানব কন্যার সকাল । বাঙ্গালী জাতির অশ্রু ঝরানোর সকাল । পঁচাত্তরের এই দিন জাতির জনককে তাঁর পরিবার-স্বজন সহ নির্মমভাবে হত্যা করা হয় । বিদেশে থাকার কারণে সেই দিন বেঁচে গিয়েছিলেন তাঁর দুই কন্যা সন্তান । সেই দুই কন্যা শেখ হাসিনা-শেখ রেহানা পাহাড় সম শোক কে পাথর চাপা দিয়ে শোককে শক্তিতে পরিণত করে বাবা-মা-ভাই-নিকট জনের রক্তের অঙ্গীকারে ফিরের আসেন এই দেশে, যাঁদের জন্য তাঁর পিতার রক্তে রঞ্জিত্ হয়েছে বাংলার মাটি সেই বাংলায় বাঙ্গালীর কাছে । ইতিহাস সাক্ষী অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে পঁচাত্তর থেকে, এখনও প্রতি মূহুর্তে ষড়যন্ত্রের পদধ্বনি ।
সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করেই তো তিনি জাতির পিতার হত্যার প্রতিশোধ নিয়ে আমাদেরকে পিতৃহত্যার কলঙ্ক থেকে মুক্ত করেছেন । শুধু কি তাই সেই সাথে একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ শহীদ ও অগুনীত মা-বোনের সম্ভমহানীর প্রতিশোধ নেওয়ার ব্যবস্হা করে আমাদের কলঙ্ক মোচনে সাহায্য করলেন তো এই দুই কন্যায় ।
অনেকেই অনেক রাজনৈতিক বিতর্ক করতে পারেন, পারেন পাওয়া-না পাওয়ার ক্ষোভ প্রকাশ করতে । কিন্তু আমার মতো একজন সাধারণ সাংস্কৃতিক কর্মীর বিবেচনায় এই দুইটি ঘটনায়, বাঙ্গালী জাতি যতদিন টিকে থাকবে ততদিন বঙ্গবন্ধু কন্যাদের কেউ ইতিহাস থেকে মুছে ফেলতে পারবেন না । তাঁদেরকে জানাই অন্তরের অন্তস্হল থেকে অভিনন্দন, স্যালুট তাঁদের জন্য ।
আজকের সকাল এদেশের রাজনীতিতে সুবিধাবাদ, চাটুকারীতা, লুণ্ঠন, পেশীশক্তি-অবৈধ অর্থশক্তি প্রদর্শনের সকাল, আজকের সকাল অবৈধ ক্ষমতা দখলের সকাল ।
সুতরাং আসুন আজ সকালে আবারও শপথ নি জাতির জনকের স্বপ্নের শোষনহীন-বঞ্চনাহীন, অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের ।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু ।
ডি এম শাহিদুজ্জামান এর কলাম