মোঃ মেহেদী হাসান, মণিরামপুর : ক’দিন বিরতি থাকার পর আবার চিরাচরিত রূপ দেখা দিচ্ছে যশোরের মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সো। একসময় চিকিৎসক সংকটের নামে এই হাসপাতালে রোগীর দীর্ঘ লাইন থাকলেও যেমন দেখা মিলতো না ডাক্তারদের, ঠিক সেই একই চিত্র এখন আবার ফুটে উঠেছে।
রোববার (৫ এপ্রিল) সকাল সাড়ে নয়টায় সরেজমিন হাসপাতালের বহির্বিভাগে রোগীর ভিড় দেখা গেলেও কোনো কে চিকিৎসকদের দেখা মেলেনি। রোগীদের কেউ কেউ সকাল আটটা থেকে ডাক্তারের অপেক্ষায় রয়েছেন। অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে না পেরে এক বৃদ্ধাকে সিঁড়িতে বসে থাকতে দেখা গেছে।
এসময় খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, বহির্বিভাগে টিকিট কাউন্টার থেকে দশজনের বেশি রোগী টিকিট নিয়েছেন। আরো ২০-৩০ জন টিকিট সংগ্রহ করতে লাইনে রয়েছে। চিকিৎসকদের কক্ষগুলো খোলা কিন্তু কোনো ডাক্তার নেই। রোগীদের ব্যস্ততা দেখে তাদের ধমক দিয়ে টিকিট বিক্রেতা হাবিবুর রহমান বলছেন, ‘এখনো ডাক্তারের খবর নেই। এতো ব্যস্ত কেন?’
দন্ত্য বিভাগ খোলা থাকলেও ডা. দীপঙ্করকুমারকে সেখানে পাওয়া যায়নি। পরে ইউএইচএ’র কে গিয়ে তার দেখা মেলে। তিনিও ২০ মিনিট দেরি করে হাসপাতালে ঢুকেছেন। এছাড়া হাসপাতালের ফার্মেসিটিও তালাবদ্ধ দেখা যায়।
উপজেলার মাসনা গ্রামের বৃদ্ধা আমেনা বেগম জানান, ডায়াবেটিসের সমস্যা নিয়ে অনেক আগে হাসপাতালে আইছি। কোনো ডাক্তার পাইনি। তাই এহিনে সিঁড়িতে বইসে আছি।’
হাসপাতালের ১৫ নম্বর করে সামনে অপোয় থাকা চালকিডাঙ্গা গ্রামের নূর মোহাম্মদ বলেন, ‘এক ঘণ্টারও বেশি আগে হাসপাতালে আইছি। টিকিট নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। ডাক্তারের খবর নেই।’
একই অভিযোগ রোহিতা শেখপাড়া গ্রামের হোসেন আলী, খেদাপাড়া গ্রামের পুষ্পরানি পালসহ অনেকের।
১৫ জনেরও বেশি চিকিৎসক থাকলেও করোনাভাইরাসের কারণে সকাল নয়টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মণিরামপুর হাসপাতালের বহির্বিভাগে পাঁচজন করে ডাক্তারের রোগী দেখার কথা। এই ভাইরাস সংক্রমণরোধে লোকসমাগম না ঘটিয়ে দ্রুত চিকিৎসা সেবা দিয়ে রোগীদের ছেড়ে দেওয়ার কথা থাকলেও তা মানছেন না ডাক্তাররা। হাসপাতালের প্রধানের কড়া ভূমিকা না থাকায় এমনটি হচ্ছে বলে অভিযোগ। এছাড়া সরবরাহ থাকলেও পিপিই না পরে অনেককে হাসপাতালে ডিউটি করতে দেখা গেছে।
ডাক্তার না বসার কারণ জানতে চাইলে মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা ডাক্তার শুভ্রারানী দেবনাথ বলেন, ‘কেন? ডাক্তারদের তো রুমেই থাকার কথা।’
পরে এই প্রতিবেদকের সামনে তিনি ডাক্তারদের ডেকে দ্রুত কে যাওয়ার নির্দেশ দেন। তবে, সময় পার হলেও ডাক্তার না বসার বিষয়ে স্পষ্ট কিছু বলেননি ডা. শুভ্রা।