একাত্তর নিউজ, যশোর অফিস :
চাঁদাবাজি সংক্রান্ত দ্বন্দ্বের জের ধরে কুিপয়ে হত্যা করা হয় যশোরের কাজীপাড়ার কোরবান আলী পচাকে। একটি জমির বিষয়ে চাঁদা দাবি এবং চাঁদা না পেয়ে মারপিট ও গালিগালাজ করায় সংঘবদ্ধরা খুন করে পচাকে।
খোলাডাঙ্গার সিরাজুল ইসলাম চুন্টুর ছেলে হত্যাকান্ড ঘটনার নায়ক রোকন হাসান রনিকে (২৮) বগুড়া থেকে আটক করেছে যশোর জেলা গোয়েন্দা শাখা। একই সাথে খুনে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্রটিও উদ্ধার হয়েছে।
১০ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ১১ টায় যশোরের পুরাতনকসবা চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এমএম কলেজের পুরাতন ছাত্রাবাসের বিপরীতে কাজীপাড়ার মৃত শেখ মোহাম্মদ আলীর ছেলে কোরবান আলী পচাকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টা করা হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে প্রথমে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ওইদিনই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেডিকেল থেকে ঢাকা ২৭ প্লাস প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ ফেব্রুয়ারি মারা যান। এ ঘটনায় কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা হয়, যার নাম্বার ৬০। মামলার পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অপরাধ ও প্রশাসন মোহাম্মদ সালাউদ্দিন শিকদারের তত্ত্বাবধানে এবং জেলা গোয়েন্দা শাখার অফিসার ইনচার্জ সোমেন দাসের নেতৃত্বে আটক অভিযান ও তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পুরাতন কসবা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক এসএম আকিকুল ইসলাম ১টি পালসার মোটরসাইকেলসহ খোলাডাঙ্গার জন বিশ্বাসের ছেলে রিচার্ড বিশ্বাসকে (৩৪) আটক করেন। রিচার্ড বিশ্বাস আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। ঘটনায় জড়িত অন্যান্য আসামি পলাতক থাকে।
এরপর ৩ মার্চ বিকেল সাড়ে ৩ টায় মামলার তদন্ত কর্মকর্তার নেতৃত্বে ডিবির একটি চৌকস টিম বগুড়া জেলার সদর থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় ঘটনার নায়ক প্রধান আসামি রোকন হাসান রনি (২৮) আটক হয়। আটকের পর তার স্বীকারোক্তিতে ও দেখানো মতে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ডাব কাটার দা চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন সেবা সংঘ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের পেছনের কলাবাগান ও ময়লার স্তূপের মধ্য থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি সকাল সাড়ে ৮ টায় উদ্ধার করা হয়।
আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে এবং প্রাথমিক তদন্তে হত্যাকান্ডের কারণ হিসেবে পুলিশ তথ্য পেয়েছে, চাঁদাবাজি দ্বন্দ্বেই এই খুন। আটক রিচার্ড বিশ্বাসের কাছে কোরবান আলী পচা ও এজাহার নামীয় আসামি পিরু একটি জমি সংক্রান্তে চাঁদা দাবি করে। রিচার্ড বিশ্বাস কোরবান আলী পচাকে চাঁদা না দিলে কোরবান আলী ও পিরুদের মধ্যে মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে ঘটনার আগের রাতে চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ডে আসামি আমিরুল ও পিরুকে ভিকটিম কোরবান আলী পচা মারধর ও গালিগালাজ করে। এরই জের ধরে আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ১০ ফেব্রুয়ারি হামলা চালায়। সকাল সাড়ে ১১ টায় কোরবান আলী পচা মোটরসাইকেলযোগে ঘটনাস্থলে আসলে রোকন হাসান রনি তার সহযোগীদের নিয়ে গতিরোধ করে কথাকাটাকাটি শুরু করে। একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে থাকা রনির ভাই ডাব ব্যবসায়ী মিরুর ডাব কাটার দা নিয়ে কোরবান আলী পচাকে রনিসহ অন্য একজন কুপিয়ে ও চাকু দিয়ে আঘাত করে। অভিযানিক টিম হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত আরো ১টি কিরিচ ও দুটি মোটরসাইকেল জব্দ করে।