যশোরের বকচরে ফের সক্রিয় চোরাই গাড়ি সিন্ডিকেট
শফিকুল ইসলাম যশোর:
যশোরে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে চোরাই গাড়ি সিন্ডিকেট। রাতারাতি বনে যাচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকার মালিক প্রশাসনের নিরব ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সাধারণ মানুষের মধ্যে, চলছে নানা ধরনের আলোচনা সমালোচনা। দীর্ঘ কয়েক মাস বন্ধ থাকার পর যশোর শহরের বকচর এলাকায় চোরাই গাড়ি বিকিকিনি এবং যন্ত্রাংশ খুলে বিক্রি করা সিন্ডিকেট পুনরায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে। ১০-১২ জনের একটি সংঘবদ্ধ চক্র এই অবৈধ কারবার পরিচালনা করছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
সূত্র জানায়, লক্ষীপুর থেকে চুরি হওয়া একটি ট্রাকের সন্ধানে অভিযান চালিয়ে যশোরের বকচর এলাকা থেকে ট্রাকের বিভিন্ন খণ্ড উদ্ধার করেছে পুলিশ। ১ ও ২ মার্চ যৌথ অভিযানে লক্ষীপুর সদর থানা পুলিশ ও যশোর কোতোয়ালি থানা পুলিশ বকচর বকুলতা এলাকার রাজকুমারের পুরাতন পার্টসের দোকানের সামনে থেকে ট্রাকটির খণ্ডিত অংশ উদ্ধার করে। তবে অভিযানের খবর পেয়ে চোরাই সিন্ডিকেটের সদস্য রাজকুমার পালিয়ে যায়।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পুরাতন লোহা ও মোটর পার্টস ব্যবসায়ী সমিতির কিছু সদস্য এই সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত এবং তারা পুলিশের তদন্ত ভিন্নখাতে নেওয়ার চেষ্টা করছেন। এমনকি অভিযুক্ত রাজকুমারকে রক্ষা করারও চেষ্টা করেছেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বাকবিতণ্ডার ঘটনাও ঘটেছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, লক্ষীপুরের ট্রাক ব্যবসায়ী মামুন আহমেদের ট্রাকটি ২৭ ফেব্রুয়ারি চুরি হয়। এ বিষয়ে ১ মার্চ লক্ষীপুর সদর থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। পুলিশি তদন্তে জানা যায়, চুরি হওয়া ট্রাকটি যশোরের বকচরে রয়েছে। এরপর ১ মার্চ রাতে লক্ষীপুর ও যশোর পুলিশের যৌথ অভিযানে ট্রাকের বিভিন্ন অংশ উদ্ধার করা হয়।
গোয়েন্দা সূত্রে জানা গেছে, চোরাই ট্রাক বিক্রির সঙ্গে জড়িত একটি সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয়। এই চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন জেলা থেকে চুরি করা গাড়ি এনে যশোরের বকচর এলাকায় এনে খণ্ড করে বিক্রি করে। পুরোনো সিন্ডিকেটের অনেক সদস্য এখন গা ঢাকা দিলেও নতুন চক্রটি সক্রিয়ভাবে এই অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি কাজী বাবুল হোসেন জানান, “বকচর এলাকায় বেশ কিছু সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে। লক্ষীপুর থেকে চুরি হওয়া একটি ট্রাক উদ্ধার করা হয়েছে এবং তদন্ত অব্যাহত রয়েছে।” অভিযানের নেতৃত্ব দেওয়া লক্ষীপুর থানার এসআই হুমায়ুন কবীর বলেন, “যশোরের বকচর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে চোরাই গাড়ির সিন্ডিকেট সক্রিয় রয়েছে। রাজকুমার নামে একজন এই চক্রের মূল হোতা, যিনি বর্তমানে পলাতক। তাকে দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।”
যশোর কোতোয়ালি থানার এসআই আলমগীর হোসেন জানান, “চোরাই গাড়ি বিক্রির চক্রটি ভোল পাল্টে অবৈধ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয় রাজনৈতিক মহল ও সাধারণ মানুষ দ্রুত চোরাই সিন্ডিকেটের মূল হোতাদের আটক এবং আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে।
Please follow and like us: