একাত্তর নিউজ ডেস্ক : যশোরে ৬শ’৬৪ কোটি টাকার মুল্যের মহাসড়ক নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে কাজ। পুরাতন ইটের খোঁয়া-পাথর আর মাটি মিক্সার করেই চলছে এ বিপুল টাকার মহাসড়ক নির্মাণের কাজ।
নির্ধারিত সময় সীমা শেষ হওয়ার কয়েক মাস আগে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানগুলো তড়িঘড়ি করে যেনতেন কায়দায় কাজ সমাপ্ত করেন। যার ফলে বছর ঘুরতে না ঘুরতেই রাস্তাগুলো আবারো নষ্ট হয়ে যায়। এসব রাস্তায় প্রতি বছর বরাদ্দ থাকলেও দায়সারা মাফিক রাস্তার কাজ সম্পন্ন করা হয়। ফলে বছর যেতে না যেতেই রাস্তা গুলো আবার সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গুলো কাজ শুরুর প্রথম থেকেই নানা অনিয়মের কারণে এলাকার মানুষের ব্যপক আলোচনার মুখে পড়ে।
প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ পাওয়ার পর নির্ধারিত সময়ের কাজ শুরু না করতে পারায় জন দূর্ভোগ বেড়েছে বহুগুনে। বেশি নষ্ট হওয়া রাস্তাবাদ দিয়ে ভাল রাস্তা গুলো আগেই খুঁড়া-খুঁড়ি শুর করে। ফলে বেশি ভাঙ্গা-চোরা রাস্তা গুলো দিয়ে ঝুকি নিয়ে যান চলাচল করছে। তাছাড়া মেয়াদ শেষ হওয়ার কয়েক মাস আগে থেকে কাজ শুরু করায় নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করাও সম্ভাব হবে না বলে জানান ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানও সড়ক জনপদের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তরা। বিলম্ব হওয়ার কারণে হিসাবে সংশ্লিষ্ট কর্তা ব্যক্তিরা বৃষ্টিসহ নানান প্রকৃতিক দূর্যোগকে দায়ি করছেন।
একাধিক সুত্র থেকে জানা যায়, কাজ পাওয়া প্রকৃত ঠিকদার যশোরের স্থানীয় কিছু ঠিকাদারদের সঙ্গে নিয়ে কাজ করায় কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন বিদ্ধ হচ্ছে। মুল ঠিকদার প্রতিষ্ঠানগুলো সরাসরি কাজ করলে রাস্তা তৈরিতে অনিয়ম কম হত। যশোর থেকে মাগুরা, যশোর থেকে নড়াইল, যশোর থেকে মনিরামপুর পর্যন্ত প্রিয়েডিং মেন্টেনেন্স প্রগ্রাম (পিএমপি) বাবদ বরাদ্দের কিছু অংশ হলেও তা আবার বছর ঘুরতে না ঘুরতে আবারও প্রিয়েডিং মেন্টেনেন্সের প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।
সংশ্লিষ্ট সুত্র থেকে জানা যায়,২০১৭-১৮ চলতি অর্থ বছরে যশোর পালবাড়ির মোড় থেকে অভয়নগর রাজঘাট পর্যন্ত রাস্তায় ২টি প্যাকেজ প্রকল্পের আয়তায় এডিপির বরাদ্দ পায় ৩২১ কোটি টাকা। এর মধ্যে দু’টি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে রাস্তা নির্মাণের জন্য চুক্তি হয় ৩০৪ কোটি টাকা। যশোর পালবাড়ির মোড় থেকে সদর উপজেলার ঘুনির রাস্তার মোড় পর্যন্ত ১৫৭ কোটি টাকা মুল্যে রাস্তাটির কাজ পায় মাহাবুব ব্রাদাস ও জয়েন্ট ব্রাদার্স নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ঘুনির রাস্তার মোড় থেকে রাজঘাট পর্যন্ত ১৪৭ কোটি টাকার কাজ পায় তমা কন্সট্রাকশন নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। এ রাস্তা নির্মাণে উর্দ্বিত আছে ৫৭ কোটি টাকা। রাস্তা তৈরির সময় সীমা বেঁধে দেয়া হয় ২০১৯ সালের মধ্যে। বেনাপোল থেকে যশোর পর্যন্ত ২টি প্যাকেজ প্রকল্পের আয়তায় এডিপির বরাদ্দ পায় ৩২৮ কোটি টাকা। প্রকল্পের ১ এর অধিভুক্ত যশোর দড়টানা থেকে গদখালী পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার ১২৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা মুল্যে কাজ পায় মোজাহার এন্টারপ্রাইজ (প্রাঃ) লিমিটেড। গদখালী থেকে বেনাপোল জিরো পয়েন্ট পর্যন্ত ১৮.২ কিলোমিটার রাস্তায় ১শ’৩৭ কোটি ২৬ লাখ টাকা চুক্তিতে কাজটি পায় তাহের ব্রাদার্স লিমিটেডও মোজাহার এন্টারপ্রাইজ (প্রাঃ) লিমিটেডের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। দু’টি প্রকল্পে কাজের চুক্তি হয় ২৬৬ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। রাস্তা তৈরির শেষ সময় ১৬ অক্টবারে ২০২০ সাল । এ রাস্তা নির্মানে উর্দ্বিত আছে ৬১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। যশোর-মাগুরাও বেনাপোল বাইপাস সড়কে বরাদ্দ হয় ১৫ কোটি টাকা।
অপার দিকে যশোর-খুলনা সড়কের ২টি প্রকল্পের পুরাতন ওয়েস্টেস স্বস্ব ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করা হয়েছে ১২ কোটি টাকা। যশোর-বেনাপোল সড়কের ২টি প্রকল্পের পুরাতন ওয়েস্টেস স্বস্ব ঠিকাদারের কাছে বিক্রি করা হয়েছে ১৮ কোটি ৬৮ লাখ টাকা।
পুলের হাটের ব্যবসায়ী নওশের আলীসহ একাধিক ব্যবসায়ী জানান, রাস্তার যে অংশ ভাল ছিল আগেই রাস্তার সেই অংশগুলো খুঁড়া হয়েছে। রাস্তার ভাঙ্গা যে সব অংশ দিয়ে যানবাহন চলাচলের একেবারেই অনুাপযোগী ছিল সেগুলো এখনো পর্যন্ত সে রকমই পড়ে আছে। রাস্তায় কাজ করার লোকজন বলছে ভাঙ্গা রাস্তাগুলো মেরামত করলে রাস্তার কাজ শেষ হওয়ার আগেই আবার সেগুলো কাজ করতে হবে। তাই সেগুলো ফেলে রেখে ভাল রাস্তাগুলো খুড়েঁ সেই রাস্তার কাজ আগে করা হচ্ছে।
যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের পাশে মান্দার তলা নামক স্থানে গিয়ে দেখা যায় মোহাজার এন্টারপ্রাইজ (প্রাঃ) লিমিটেডের অস্থায়ী অফিস। এখানে সমস্ত রাস্তা খুড়ে ওয়েস্টেস সংগ্রহ করে রাখা হচ্ছে। তার পাশে উঁচু করে রাখা হয়েছে কিছু নতুন পাথর। প্রথম থেকে সেই পাথরগুলো যেমনটা ছিল ঠিক তেমনটা রয়েছে।
মহাসড়কের কাজের একটা বড় অংশ প্রায় শেষ হলেও সংরক্ষিত পাথরের পরিমান কমেনি। পাশাপাশি কয়েকটি মেশিনে সেগুলো মিক্সারিং করা হচ্ছে। সেগুলো আবার রাস্তা তৈরিতে ব্যবহারের জন্য আরো কয়েকটি ট্রাকে করে মহাসড়কে নেওয়া হচ্ছে। মহাসড়কে মাটি কাঁটা মেশিন দিয়ে এক পাশ থেকে রাস্তা খুঁেচ পুরাতন পিচও খোঁয়া উঠাচ্ছে। অন্য ট্রাকে এসে মহাসড়কের খুঁচা জায়গা পুরন করছে রি-ম