সৌদিআরব অক্সিজেন সহায়তা করে ভারতের পাশে-

http://www.71news24.com/2019/03/18/1128

একাত্তর নিউজ,আন্তর্জাতিক ডেস্ক :

ভারত কে সৌদি আরব সহায়তা করেছে ৮০ মেট্রিকটন লিকুইড অক্সিজেন ও ৫০০০ লিসিন্ডার  এটা নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের আনন্দে উদ্বেলিত কিংবা উচ্ছ্বসিত হওয়ার কিছুই নাই।

আবার ভারত কে সহায়তা করার কারণে এটা নিয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করারও অধিকার কারো নাই।

 

এটা একদমই সৌদি আরব ও ভারতের নিজেদের বৈদেশিক কূটনৈতিক সম্পর্ক বজায় রাখার অভ্যন্তরীণ কৌশলের বিষয়!

 

এইখানে আমরা সুবিধাগ্রহিতাও নই সুবিধা দাতাও নই। ভারতের পক্ষে বিপক্ষে কিংবা সৌদি আরবের পক্ষে বিপক্ষে চিল্লাচিল্লি থামিয়ে নিজেরা সচেতন হউন, যেনো আপনাদের এমন দুর্দিন না আসে!

 

সৌদি আরবের সামর্থ্য আছে তাই তারা সহযোগিতা করেছে! কিন্তু, একই সহযোগিতা বাংলাদেশের প্রয়োজনে সৌদি আরব করেনি সূদুর অতীতে অন্য বিভিন্ন ব্যাপারে বিভিন্ন প্রয়োজনে। যুক্তিতর্ক করার শখ থাকলে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার কতদিন পর সৌদি আরব বাংলাদেশ কে স্বীকৃতি দিয়েছিলো সেই ইতিহাস একটু জেনে নিয়েন!

 

ভবিষ্যৎ কালে কে কার প্রয়োজনে কার জন্যে কি করবে কে জানে?

https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=978501675887706&id=100011836481427

সৌদি আরব যখন বাংলাদেশের নারী শ্রমিকদের যৌনকাজে ব্যবহার করে বেতন না দিয়ে অন্যায় ভাবে আন্তর্জাতিক অপরাধ করে লাশ বানিয়ে দেশে পাঠায়, তখন কোন কোন দেশ প্রতিবাদ করে আর কোন কোন দেশ চুপ থাকে, তা কিন্তু আমাদের দেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানেন এবং যথেষ্ট ই অবগত আছেন! আন্তর্জাতিক বিশ্বে যে কোন বিষয়ে যেখানে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করারও সুযোগ থাকে, সেখানে সৌদি আরব প্রকৃত পক্ষে মুসলমানদের পক্ষে বাংলাদেশের পক্ষে বিপক্ষে থাকা দেশগুলির পক্ষে থাকেন না বিপক্ষে থাকেন, তা কিন্তু আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মহোদয় জানেন। তাই আমাদের মতো আম পাব্লিক এত চিল্লানোর কিছুই নাই!

 

ভারতের কাছে আমরা যে ভ্যাক্সিন পাওনা ভারত আমাদের কে সেই ভ্যাক্সিন ই দিচ্ছেনা সঠিক সময়ে। নিজেদের প্রাপ্য না পেয়েও অন্যের প্রতি দানশীলতা নিয়ে আমাদের এত আবেগ সত্যিই হাস্যকর! বাংলাদেশে একটা কথা প্রচলিত আছে, “নিজের ক্ষেত দিয়া বাগি, পরের ক্ষেত নিরায়া বাগি”। এর অর্থ হলো নিজের জমি অন্যের কাছে বর্গা দিয়ে অম্যের জমি নিজে বর্গা চাষ করা। আমরা ভারত কে যে টাকা পরিশোধ করেছি ভ্যাক্সিন এর জন্যে তা ই ভারত আমাদের পৌঁছাতে ব্যর্থ হয়েছে!

 

আন্তর্জাতিক বিশ্বে আমাদের দুঃসময়ে ভারত ভোট দান থেকে বিরত থাকে, ভারতের মন্ত্রী ডায়লগ দেন বাংলাদেশের মানুষ খেতে না পেয়ে ভারতে চলে যাচ্ছে, ভারতে থাকা সকল রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় ভারত, শুধুমাত্র মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষজন বেশি হওয়ায় পশ্চিম পাকিস্তানের মতোই বাংলাদেশ কে প্রকাশ্যে ঘৃণা করে ভারতীয়দের বড় অংশের লোকজন, ক’জন ভারতীয় প্রতিবাদ করেন এসবের? আগরতলা, কোলকাতা, ত্রিপুরা ব্যতীত বাংলাদেশের সাথে ভারতের সুসম্পর্ক রক্ষায় প্রচেষ্টা নেই কারোরই।

 

আবেগী হওয়া থামিয়ে দেশপ্রেমিক হউন। ভারতীয়রা আপনাদের মতো হাল্কা আবেগ দিয়ে দেশপ্রেম এর পরিমাপ নির্ধারণ করেনা। আমি না তো ভারতের বিরুদ্ধে না সৌদির পক্ষে বলতে চাই। আমি এইটুকুই চাই, বাংলাদেশ এই বিষয়ে তৃতীয় পক্ষ। বাংলাদেশের কতিপয় নাগরিকদের এই আস্ফালন হাস্যকর।

 

স্বাভাবিক ভাবেই সৌদি আরবের ভারত কে সহযোগিতা করা নিয়ে আমাদের এত অতিরিক্ত আস্ফালনে লাফালাফির কিছুই দেখিনা। আমরা যারা ভারতে চিকিৎসা করতে যাই নিয়মিত বিভিন্ন অযুহাতে, আমাদের উচিৎ দেশের সম্পদ লুট করা বন্ধ করে নিজের দেশে স্বাস্থ্য ও নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করা!

 

যদিও সবাই চোর নয়! কিন্তু, ফেইজবুকে নীতিবাক্য প্রচারকদের বড় অংশটা ই যে দুর্নীতিবাজ তা তাদের বিলাসী জীবন যাপনের স্টাইল দেখলেই বুঝা যায়!

 

একটা প্রবাদ আছে না, “নগর পুড়ালে দেবালয় এড়ায় না”।

 

সাবধান হউন, সচেতন হউন।

দেশপ্রেমিক হউন বাস্তব জীবনে, ফেইজবুকে না।

Please follow and like us: