মোঃ মেহেদী হাসান, মণিরামপুর : যশোরের মণিরামপুরে দরিদ্র ও কর্মহীনদের জন্য আড়াই হাজার টাকার মানবিক সহায়তার তালিকায় দুই ইউপি সদস্য ও তাদের প্রিয়জনদের মোবাইল নম্বর পাওয়া গেছে। অভিযোগ করা হচ্ছে, উপজেলার কাশিমনগর ইউপির এক নম্বর ও দুই নম্বর ওয়ার্ডে ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম ও নিখিল দাস হতদরিদ্রের নামের তালিকায় তাদের (উপকারভোগীদের) মোবাইল নম্বর না দিয়ে অর্থ আত্মসাতের উদ্দেশে নিজের ও স্বজনদের মোবাইল নম্বর দিয়েছেন।
বিষয়টি জানাজানি হলে দুই মেম্বরের আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন এলাকাবাসী। তাদের শাস্তির দাবিতে ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
করোনাকালীন দুর্যোগে নিন্মআয়ের ও কর্মহীন মানুষের জন্য ঈদ উপলে ৫০ লাখ মানুষকে আড়াই হাজার টাকা মানবিক সহায়তার ঘোষণা দেয় সরকার। যারমধ্যে মণিরামপুরে তালিকা হয়েছে ১২ হাজার উপকারভোগীর।
মণিরামপুরের তালিকায় কাশিমনগর ইউপিতে নাম রয়েছে ৪২৮ জনের। যারমধ্যে এক নম্বর ওয়ার্ডে ৪৭ জন ও দুই নম্বর ওয়ার্ডে ৪৪ জনের তালিকা রয়েছে।
ইউএনও অফিসে অভিযোগপত্রের সাথে জমা দেওয়া তালিকা খতিয়ে দেখা গেছে কাশিমনগর ইউপির উপকারভোগীর তালিকার ৫৯ ও ৬৪ নম্বর ব্যক্তি তারক দাস ও খোকন দাস। এই দুই ব্যক্তির নিজের মোবাইল নম্বর থাকলেও নিখিল মেম্বর তাদের নম্বর না দিয়ে নিজের মোবাইল নম্বর দিয়েছেন। ৮১ নম্বর তালিকার ব্যক্তি সুধির দাসের নামের বিপরীতে নিখিল তার স্ত্রীর নম্বর দিয়েছেন।
এছাড়া ৫০,৬৩,৭৬ ও ৮৯ নম্বর তালিকার ব্যক্তিদের মোবাইল নম্বর না দিয়ে নিজের অনুসারীদের নাম দিয়েছেন।
আর ইউপি সদস্য শহিদুল ইসলাম তালিকার ৩২ নম্বর সিরিয়ালের ব্যক্তি শরিফুল ইসলামের নামের পাশে তার ফোন নম্বর না দিয়ে নিজের মোবাইল নম্বর দিয়েছেন। এছাড়া ১৮,১৯,২৪ ও ২৯ নম্বর ব্যক্তির নামের বিপরীতে মেম্বর শহিদুল নিজের নিকটতমদের মোবাইল নম্বর ব্যবহার করেছেন।
কাশিমনগর ইউপির তালিকার ৬৩ নম্বর সিরিয়ালের তালিকাভুক্ত পলাশ অভিযোগ করে বলেন, আমার কাছে নিখিল মেম্বর নাম দেওয়ার কথা বলে ৫০০ টাকা চায়। আমি টাকা দিতে রাজি হইনি। আমার নিজের মোবাইল নম্বর আছে। টাকা দিইনি বলে মেম্বর আমার নম্বর বাদ দিয়ে নিজের অনুসারী দাউদ নামে একব্যক্তির মোবাইল নম্বর দিয়েছেন।
অভিযুক্ত ইউপি সদস্য নিখিল দাস বলেন, তালিকা করার সময় দ্রুত কাজ করতে হয়েছে। যাদের ফোন নম্বর ছিল না তাদের নামের পাশে আমার ও স্ত্রীর মোবাইল নম্বর দিয়েছি।
যদিও নিখিলের তালিকার ৪৪ জনেরই ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বর রয়েছে।
আর শহিদুল মেম্বর দাবি করেন, তালিকার ৩২ নম্বর ব্যক্তি শরিফুল নিজেই তার নম্বরের স্থানে আমার মোবাইল নম্বর বসিয়েছে। আমি কিছু জানি না।
অন্য চার নামের অভিযোগের ব্যাপারে শহিদুল মেম্বর বলেন, তাড়াতাড়ি কাজ করতে গিয়ে সমস্যা হয়েছে।
কাশিমনগর ইউপি চেয়ারম্যান জিএম আহাদ আলী বলেন, তালিকা করার সময় সব মেম্বরদের স্বচ্ছতা বজায় রাখতে নির্দেশনা দেওয়া ছিল। যারা তালিকাভুক্ত হবেন তাদের মোবাইল নম্বর দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। তারপরও নিখিল ও শহিদুল তাদের মোবাইল নম্বর তালিকায় দিয়ে গুরুত্বর অন্যায় করেছেন। এটা কোনভাবে কাম্য নয়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহসান উল্লাহ শরিফী বলেন, দুই মেম্বরের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তে তারা দায়ী হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
২৫০০ টাকার তালিকায় দুই মেম্বরের একাধিক মোবাইল নম্বর
http://www.71news24.com/2019/03/18/1128
Please follow and like us: