একাত্তর নিউজ ডেস্ক :
যশোর সদরের কৃষ্ণবাটি গ্রামের একটি তিনতলা বাড়ির ছাদ থেকে হৃদয় শেখ (২২) নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সে খোলাডাঙ্গা বামনপাড়ার হামিদুল হকের ছেলে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের পোড়া দাগ রয়েছে।
যশোর কোতয়ালি মডেল থানার এসআই মিজানুর রহমান জানান, সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কৃষ্ণবাটি গ্রামের সাজুর বাড়ির তিনতলা ছাদের ওপর এক যুবকের লাশ পড়ে আছে এমন সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে যান। পরে ওই যুবকের লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট করে সোমবার দুপুরে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়।
কোতয়ালি থানার ওসি (তদন্ত) সমীর কুমার সরকার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এসআই মিজানুর রহমান আরো জানান, হৃদয় খানের বিরুদ্ধে থানায় ৮টি মামলা রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় চুরি করে বেড়াত বলে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। রাতে ওই বাড়িতে চুরি করতে গিয়ে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে তার মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। হৃদয় খানের শরীরে বিভিন্ন জায়গায় পোড়া দাগ রয়েছে বলে তিনি সুরতহাল রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।
হৃদয় শেখের দাদি হাজেরা খাতুন জানান, হৃদয় খান রাজ মিস্ত্রির জোগালে হিসেবে কাজ করতো। রবিবার সকালে বাগেরহাটের ফকিরহাট ফুফু বাড়ি যাওয়ার জন্য দুপুরে বাড়ি থেকে খেয়ে বের হয়। রাতে আর বাড়িতে ফেরেনি। সোমবার দুপুরে স্থানীয়দের সংবাদের ভিত্তিতে হাসপাতালে এসে হৃদয় খানের লাশ দেখতে পায়।
প্রতিবেশি কামাল হোসেন জানান, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হৃদয় খানের লাশ কৃষ্ণবাটির সাজুর বাড়ির তৃতীয় তলার ছাদে পড়ে আছে জানতে পেরে তারা কয়েকজন ওই বাড়ি যান। কিন্তু সেখানে লাশ না পেয়ে জেনারেল হাসপাতালে মর্গে যান তারা।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, যশোর কোতয়ালি মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার আমিরুজ্জামানের সোর্স শহরের ওয়াপদাহ এলাকার বাপ্পার স্ত্রী নাসরিন নাহার তুলি তার ভাই অনু, শিমুল এবং মামাতো ভাই রনি দীর্ঘদিন ধরে খোলাডাঙ্গা, কৃষ্ণবাটি এলাকায় ইয়াবা ব্যবসা করে আসছে। সম্প্রতি তুলি খুলনা ডিআইজির সাথে দেখা করে এসেছেন বলে এলাকায় প্রচার চালিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করছে। কয়েকদিন আগে হৃদয় খান ও ওয়ালিল্লাহ নামে দুই যুবককে খেয়ে ফেলার হুমকি দিয়েছেন ইয়াবা ব্যবসায়ী নাসরিন। এছাড়া হৃদয় খানসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে বোমা হামলার একটি কথিত মামলা দিয়ে তাকে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেয়া হয়। ওই মামলায় হৃদয় খান ৮ মাস জেলে ছিল। তিন মাস আগে সে জেল থেকে বের হয়েছে। তার পিতা হামিদুলও বর্তমানে জেল খানায় রয়েছে। এসবের ইন্ধনদাতা ওই নাসরিন। এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।
এলাকাবাসী জানায়, হৃদয় খান ইতোপূর্বে কৃষ্ণবাটিতে ভাড়া থাকতো। সেখানে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরণের মামলা দেয়া হয়েছে। যার কারণে ওই এলাকা ছেড়ে সে চলে এসেছে।
রবিবার রাতে কৃষ্ণবাটি মোড়ে চায়ের দোকানে বসে কয়েকজনের সাথে কথা বলতে দেখেছে বলে তার বন্ধুরা জানিয়েছেন।
হৃদয় খানকে পিটিয়ে এবং পরে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছে তার দাদিসহ স্বজনরা।