স্টাফ রিপোর্টার, একাত্তর নিউজ :আলোচিত কোয়াক ডাক্তার খলিলসহ দুই প্রতারক সাংবাদিক পরিচয়ে ২০ হাজার টাকা চাঁদাদাবির অভিযোগে গণধোলাই দিয়েছে স্থানীয়রা। গত মঙ্গলবার রাতে যশোরের অভয়নগর উপজেলার প্রেমবাগে এই ঘটনা ঘটেছে।
বসুন্দিয়া এলাকার বহুলালোচিত প্রতারক, অস্ত্র ও ডাকাতিসহ ডজনখানেক মামলার আসামি খলিলুর রহমান চাঁদাবাজি মূলক এই ঘটনা ঘটিয়ে বেড়াচ্ছেন বলে স্থানীয়রা দাবি করেছে। অভয়নগরের প্রেমবাগ গ্রামের আয়ুব আলী জানিয়েছেন, তার ছেলে রনি হোসেনকে বিয়ে দেয়ার জন্য সদর উপজেলার কেফায়েতনগর গ্রামের অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীর সাথে কথাবার্তা হয়েছিল।
এরই মধ্যে মেয়েটির বয়স পরিপূর্ণ না হওয়ায় এতে সম্মতি দেননি রনি ও তার পরিবার। এক পর্যায় সেখানে রনিকে বিয়ে দিবেন না বলে সিদ্ধান্ত নেন তার পরিবার। এই ঘটনার জের ধরে গত মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে বহুলালোচিত কোয়াক ডাক্তার খলিলুর রহমান ও তার সঙ্গীয় শিমুল(রুপদিয়া) নামে কথিত সাংবাদিক পরিচয়ে দুই চাঁদাবাজ আয়ুব আলীর বাড়িতে যান।
এসময় তারা নিজেদের বড় মাপের সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে আয়ুব আলীর কাছে ২০ হাজার টাকা চাঁদাদাবি করেন। আর চাঁদার টাকা পরিশোধ না করলে আয়ুব আলীর বিরুদ্ধে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করার হুমকি দেয়া হয়। বিষয়টি তাৎক্ষণিক স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অবহিত করেন আয়ুব আলী।
এরপরে স্থানীয়রা আয়ুব আলীর বাড়িতে এসে খলিল ও তার সহযোগি শিমুলের কাছে চাঁদাদাবির বিষয়টি জানতে চান। কিন্তু তারা সন্তুষ্ট জনক কোন জবাব দিতে পারেনি। ফলে স্থানীয়রা তাদের দুইজনকে গণধোলাই দিয়ে ঘেরাও করে রাখে। এরই মধ্যে সুযোগ বুঝে তারা সেখান থেকে সটকে পড়ে।
এদিকে সাংবাদিকের পরিচয় দিয়ে চাঁদাদাবির ঘটনায় প্রেমবাগ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি সৈয়দ আব্দুল হাকিম, সাংগাঠনিক সম্পাদক মোল্যা সাঈদ আলম বাচ্চু, সাবেক যুবলীগ সভাপতি সৈয়দ ওয়াহিদুজ্জামান মিন্টু বলেছেন, সাংবাদিকতার নামে প্রতারনাকারিদের আটকের পর আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে তুলে দেয়ার ঘোষণা দেন।
উল্লেখ্য কয়েক বছর আগে কথিত সাংবাদিক খলিলুর রহমান ইতিপূর্বে যশোর-মাগুরা মহাসড়কে ডাকাতিকালে অস্ত্রসহ পুুিলশের হাতে গ্রেপতার হয়। এছাড়া তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন, অপচিকিৎসা, ডাকাতি, অবৈধ অস্ত্র ও প্রতারণাসহ ডজন খানেক মামলা রয়েছে। বসুন্দিয়াতে বিভিন্ন সাইনবোর্ডে জালিয়াতি ও ভূয়া কাগজপত্র দেখিয়ে ক্লিনিক ব্যবসা করতে গিয়ে একাধিকবার ভ্রাম্যমান আদালত তাকে জেল-জরিমানা করেছে।
সর্বশেষ বসুন্দিয়াতে ‘মহুয়া সার্জিক্যাল ক্লিনিক’ নামে তার ক্লিনিকটি অবৈধভাবে চালু রাখা ও অপচিকিৎসার অভিযোগে ভ্রাম্যামান আদালত সীলগালা করে এবং খলিলুর রহমানকে দণ্ড দিয়ে গ্রেফতার করে নিয়ে যায়। কিছুদিন পরে জামিনে ছাড়া পেয়ে সে এখন সাংবাদিক পরিচয়ে কয়েকটি অখ্যাত গণমাধ্যমের আইডি কার্ড দেখিয়ে বিভিন্ন এলাকায় চাঁদাবাজি ও প্রতারণা করে আসছে।
এছাড়া সম্প্রতি বসুন্দিয়া মোড়ের একজন পল্লী ডাক্তারের নিকট মোটা অংকের চাঁদাদাবি করে খলিলুর রহমান। চাঁদাবাজদেরকে আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকাবাসী।