একাত্তর ডেস্ক : যশোরের শার্শায় জিপের চাপায় পা হারানো মেধাবী স্কুল ছাত্রী নিপাকে প্রশাসন থেকে উল্লেখযোগ্য সহযোগিতা করা হচ্ছে না। প্রশাসনের পক্ষ থেকে একাধিকবার চিকিৎসা খরচসহ সকল সহযোগিতার আশ্বাস দিলেও ভুক্তভোগী পরিবারটিকে উল্লখযোগ্য ভাবে কোন আর্থিক সহযোগিতা করা হচ্ছে না ।নীপার চিকিৎসার জন্য মানব বন্দন।
আর চালককেও এখনো পর্যন্ত পুলিশ আটক করতে পারেনি বলে আজ বুধবার নিপার মা মুসলিমা খাতুন জানান।
তিনি জানান, তার মেয়ে নাভারণ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেনীর একজন মেধাবি ছাত্রী। গত কয়েকদিন আগে পঞ্চম শ্রেণীতে মেধাবৃত্তির ফলাফলে ট্যালেন্টপুলি বৃত্তি পেয়েছে। মেয়েকে নিয়ে তিনি চারদিকে ধুয়াশা দেখছেন। অনেক আশা ছিল মেয়েকে ডাক্তার বানাবেন। এখন সেই স্বপ্ন পূরণ করাতো কঠিন ব্যাপার মেয়েটি সুস্থ হয়ে উঠেতে পারবেন কিনা এ চিন্তায় তার ঘুম-খাওয়া নেই। তার বাবা একটি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চাকরি করে। পরিবারের তেমন সম্পদও নেই। তার পক্ষে উন্নত চিকিৎসার টাকা জোগাড় করা কঠিন। ঘটনার দিন জেলা প্রশাসক নিজে ও নাভারনে শিক্ষার্থীদের এক মানববন্ধনে শার্শা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল চিকিৎসাসহ ও আর্থিক সহযোগিতা করার আশ্বাস দেন। কিন্তু ঘটনার সাতদিন পার হলেও তারা সেই অর্থে আর্থিক সহযোগিতা পাননি। জেলা প্রশাসন থেকে মাত্র দশ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। এখন পর্যন্ত খরচ হয়েছে ১ লাখ টাকা। কৃত্রিম পা লাগিয়ে সম্পূর্ণ সুস্থ হতে ১০ থেকে ১২ লাখ টাকা প্রয়োজন হবে বলে ডাক্তাররা জানিয়েছেন। পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় তার মেয়ের চিকিৎসা করা হচ্ছে। তার মেয়ের ক্ষতি কোনভাবেই পূরণ করা সম্ভব নয়। উন্নত চিকিৎসার মাধ্যমে কৃত্রিম পা লাগিয়ে মেয়ে আবারো স্কুলে ফিরিয়ে আনতে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সুদৃর্ষ্টি কামনা করেন। তাহলে মেয়েটি কারো বোঝা হয়ে থাকবে না। লেখাপড়া শিখে মানুষের মত মানুষ হতে পারবে।
নিপার বাবা রফিকুল ইসলাম জানান, মেয়েটি যেন সমাজের বোঝা না হয়, সেই জন্য প্রশাসনের কাছে চালককে উপযুক্ত শাস্তি দেয়ার দাবি করেন। তিনি মাস্টার্স পাশ। প্রধানমন্ত্রী তার একটি সরকারি চাকরির ব্যবস্থা করে দিলে তার সকল দুঃচিন্তার অবসান হতো।
শার্শা উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা পুলক কুমার মন্ডল বলেন, নিপাকে প্রশাসন থেকে ১০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য হালপাতালে তদারকি করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসক নিজে তাদের বিভিন্ন ভাবে সহযোগিতা করছেন। চালককে আটক করতে শার্শার পুলিশ চেষ্টা চালাচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত বুধবার (২০ মার্চ) জিপ গাড়ির চাপায় নাভারণ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ৬ষ্ঠ শ্রেণীর মেধাবী ছাত্রী মিমতাহুল জান্নাত নিপার শরীর থেকে পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ সময় তার সাথে থাকা স্মৃতি ও রিপা নামে আরো দুই স্কুল ছাত্রী আহত হয়।