যশোরে আ.লীগের দু গ্রুুপের সংঘর্ষে আহত ৬ : গ্রেফতার ৭
একাত্তর নিউজ ডেস্ক : যশোরের চৌগাছায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ছয়জন আহত হয়েছেন। জানাগেছে, উপজেলা নির্বাচনের সময় সদর ইউনিয়নের বেড়গোবিন্দপুর গ্রামে নৌকা ও আনারস প্রতীকের সমর্থকদের মধ্যে বিবাদমান দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে রোববার সকালে উভয় পক্ষের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়। এ সময় আনারস প্রতীকের ছয়জন নেতাকর্মী আহত হন। আহতরা হলেন বেড়গোবিন্দপুর গ্রামের আনিছুর রহমানের ছেলে আজাদ হোসেন (২৮), মৃত মহম্মদ আলীর ছেলে ওয়াজেদ আলী (৬০), রোকনুজ্জামানের ছেলে আমিনুর রহমান (১৮), মৃত রহমত আলীর ছেলে হাফিজুর রহমান পিন্টু (৫০), আমিরুল বিশ্বাসের ছেলে হারুন অর রশিদ (৪৫), নৌকার সমর্থক শাহাজান আলীর ছেলে হাসিবুল ইসলাম (৩৬)। আহতরা সকলেই চৌগাছা উপজেলা মডেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ডিএমএস লিয়াকত আলী বলেন, মারামারির ঘটনায় এ পর্যন্ত ছয়জনকে চিকিৎসা দিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা সবাই সঙ্কামুক্ত।
হাসপাতালে ভর্তি হাফিজুর রহমানের ভাই ভুট্ট, ওয়াজেদ আলীর ছেলে শাওন এবং হারুন-অর-রশীদের বৃদ্ধ বাবা আমিরুল ইসলাম জানান, প্রতিদিনের মতো ঘটনার দিন সকাল ৬টার দিকে কাজ করার জন্য গ্রামের মাঠে যাচ্ছিলেন। পারভেজের বাড়ির নিকটে পৌঁছালে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে একই গ্রামের বুলবুলির ছেলে পারভেজ, জনাব আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম, শহিদুল ইসলামের ছেলে আবিদুর রহমান ও রকি, তোতা মিয়ার ছেলে আলিফ হোসেন ও মনিরুল ইসলাম, আব্দুল লতিফের ছেলে তরিকুল ইসলামসহ ১০-১৫ জন লোহার রড, দা, লাঠি নিয়ে তাদের উপরে হামলা করে আহত করে।
এ ঘটনায় খাইরুজ্জামান বাদী হয়ে চৌগাছা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। অভিযোগ পেয়ে চৌগাছা থানার ওসি রিফাত খান রাজিব ও উপ-পরিদর্শক শাহিনুর রহমান শাহিনের নেতৃত্বে ঘটনায় জড়িত সাতজনকে আটক করেছেন। আটককৃতরা হলেন একই গ্রামের জনাব আলীর ছেলে শহিদুল ইসলাম, শহিদুল ইসলামের ছেলে আবিদুর ও রকি, তোতা মিয়ার ছেলে আলিফ হোসেন এবং মনিরুল ইসলাম, মৃত মকবুল হোনের ছেলে মহব্বত আলী এবং আব্দু লতিফের ছেলে তরিকুল ইসলাম।
চৌগাছা থানার ওসি রিফাত খান রাজিব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে। এলাকায় পরিবেশ শান্ত রাখতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে হামলায় অভিযুক্তরা বলেন, আমরা নৌকায় ভোট দেয়ার অপরাধে বাড়ি ছাড়া ছিলাম। নৌকার কর্মীরা বাড়ি আসতে দেখে শনিবার সন্ধ্যায় আমাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে শনিবার রাতের মধ্যে বাড়ি ছাড়ার হুমকি দেয়। বাড়ি ছেড়ে চলে না যাওয়ায় পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী আজাদ, হাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে ১০-১২ জন লোক আমার বাড়ি এসে আমাদের উপরে হামলা করে। এ সময় বারবার নির্যাতিত নৌকার কর্মীরা ঘুরে দাড়ালে প্রতিপক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, উপজেলা নির্বাচনের সময়ের নৌকা ও আনারস প্রতীকের সমর্থকদের মধ্যে বিবাদমান দ্বন্দ্বকে কেন্দ্র করে এক পক্ষ অন্য পক্ষের উপরে হামলা চালিয়ে আহত করেছে। তিনি এ ঘটনায় প্রকৃত দোষীদের শাস্তি দাবি করেছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী মাসুদ চৌধুরী বলেন, উপজেলা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট দেয়ার অপরাধে বেড়গোবিন্দপুর গ্রামের নৌকার কর্মীরা নির্যাতিত হয়েছে। এমন কি নৌকায় ভোট দেয়ার অপরাধে অনেকেই বাড়ি ছাড়তেও বাধ্য হয়েছে। ঘটনার দিন সকালে নৌকার কর্মীদের উপরে আবারও হামলা চালাতে গেলে নির্যাতিত কর্মীরা হামলা প্রতিহত করতে গেলে এ ঘটনা ঘটে।