আব্দুল করিম রাজন : একদিকে মহামারি করোনাভাইরাস, অন্যদিকে প্রচণ্ড শ্রমিক সংকট, তার ওপর কালবৈশাখির ঝড়-বৃষ্টির আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেছে যশোরের বোরো ধানের পাকা ক্ষেত। ফলে ক্ষেতের পাকা ধান নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকরা।
যশোর সদর উপজেলা কৃষি অফিসার এস.এম খালিদ সাইফুল্লাহ দেয়া তথ্যমতে,এবার যশোর সদর উপজেলায় বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ২৫ হাজার হেক্টর জমিতে। তিনি আরো বলেন এবারের ফসল উৎপাদন এর লক্ষ্যমাত্রা ১,৫০,০০০ হেক্টর।স্বাভাবিক ভাবে ফসলের ক্ষতি না হলেও তার তথ্য মতে এবার শ্রমিকদের মজুরি বেড়ে যাবে,যার কারণে ক্ষতির সম্মুখীন হবে কৃষক। মৌসুমের শুরুতে অনুকূল আবহাওয়া এবং বীজ, সার, কিটনাশকের সরবরাহ স্বাভাবিক থাকায় এবার ফলন হয়েছে বেশ ভালো। কিন্তু হঠাৎ করেই মঙ্গলবার কালবৈশাখির আঘাত এবং রাতভর বৃষ্টিতে ক্ষেতের পাকাধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে গেছে।
চাঁচড়া ইউনিয়নের রুপদিয়া গ্রামের কৃষক ইয়াছিন বিশ্বাস জানান,তিনি ইতিমধ্যে ০৬ বিঘা জমির ধান কেটেছেন। কিন্তু মঙ্গলবার রাতের ঝড় এবং রাতভর বৃষ্টিতে কাটাধান ক্ষেতেই নষ্ট হয়ে গেছে।কৃষক সামছের মোড়ল জানান, ঝড়বৃষ্টিতে তার ক্ষেতের ধানগাছ পড়ে মাটির সাথে মিশে গেছে। শুধু ইয়াছিন অথবা সামছের নয়। আক্ষেপ করে ওই এলাকার নূরো মোড়ল, নূর ইসলাম, বিকাশ চন্দ্র,সুনিল মল্লিক, খোকন হাওলাদারসহ,অনেকে জানান ধার দেনা করে বোরো চাষ করা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান বাজার দর কম, তার ওপর ঝড়বৃষ্টিতে ক্ষেতের ধান পড়ে ক্ষতি হয়ে গেছে। আবার মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে শ্রমিক সংকট থাকায় এ ধান নিয়ে তারা পড়েছেন মহাবিপাকে। যশোর সদরের পাইকারী ধান ইসলাম মিয়া জানান, মঙ্গলবার ঝড়বৃষ্টি কৃষকের পাকা ধানে মই দেয়ার সামিল। আবহাওয়া প্রতিকূলে থাকায় এবার বোরো ধান নিয়ে কৃষকের ভোগাািন্তর শেষ নেই।
যশোর শহরের উপশহর,চাঁচড়া, আরিবপুর, রামনগর, কাশিমপুর,চুড়ামনকাঠি, হৈবৎপুর,নওয়াপাড়া,দেয়াড়া, পদ্মাবিলা,লেবুতলা, ফতেপুর,কচুয়া,ইছালি, নরেন্দ্রপুরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে বোরো ধান নিয়ে এ ধরনের সমস্যার কথা জানিয়েছেন কৃষকরা। ইতিমধ্যে উপজেলার ৩০ শতাংশ ধান ক্ষেত থেকে ঘরে তুলতে পেরেছেন। অন্যদিকে আবহাওয়া যদি অনুকূলে থাকে তাহলে ১৫ দিনের মধ্যেই ক্ষেত থেকে বাকি ধান কৃষকরা ঘরে তুলতে পারবে।