রাসেল মাহমুদ।।
জমিজুড়ে পাকা ধান। উঠবে ফসল। ভরবে গোলা। খুশি আর আনন্দে ভরে উঠবে মন। কিন্তু যশোর সদর উপজেলাধীন ইউনিয়নের গোপালপুল গ্রামের কৃষক কাশেম মোল্যা পাকা ধান ঘরে তোলা নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় পড়েন। কারণ তিনি সম্প্রতি স্ট্রোক করে শারিরীক সমস্যা নিয়ে বিছানসয্যা হয়ে আছে। সেই সাথে পড়েছে আর্থিক সমস্যায়ও। জমিতে ধান পেঁকে নষ্ট হওয়ার উপক্রম হচ্ছিলো। এরই মধ্যে আশার আলো হিসাবে দেখা দিলেন নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ। নিমিষেই মাথা থেকে নামে গেলো দুঃশ্চিন্তার বড় বোঝা। বৃহস্পতিবার ২৯ এপ্রিল সকাল থেকেই অসুস্থ কৃষক কাশেম মোল্যার ৩০ শতক জমির ধান নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি শাহীন আলমের নেতৃত্বে কেঁটে-বেধে দেন। এব্যাপারে নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি শাহীন আলম বলেন, মূলত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে সারাদেশে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিনা পারিশ্রমিকে অসহায় কৃষকের পাশে দাড়িয়েছি। চলমান কর্মসূচির অংশ হিসেবে যশোর জেলা ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা কৃষকের পাশে থেকে পাকা ধান ঘরে তুলতে সাহায্য করে চলেছে। সে মতে যশোর জেলা ছাত্রলীগের নির্দেশনায় আমরা ১৪ নং নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ একজন অসহায় কৃষকের ধান কেটে দিয়েছি। লকডাউনে মৌসুমের পাকা ধান ঘরে তোলা নিয়ে দেশের অনেকস্থানের কৃষকরা আর্থিক ও শ্রমিক সংকটে মধ্যে পড়েন। অন্যান্য বছরে ধান কাটা মৌসুমের শুরুতে, বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শ্রমিকরা আসলেও গত দুই বছর করোনার কারনে আর কারনে আর আসতে পারছেনা, ফলে যশোর অঞ্চলের পাকা ধান ঘরে তুলতে নানা জটীলতার মুখোমুখি হচ্ছে চাষিরা।
অসুস্থ ধান চাষি কাশেম মোল্যা জানান, একেত অসুস্থ অবস্থায় তার ওপর লকডাউন তাই জেলার বাইরে থেকে কৃষেণ বা শ্রমিক আসেনি বল্লেই চলে। এ কারণে অতিরিক্ত অর্থেও শ্রমিক মিলানো কষ্ট। এদিকে আমার ধান পেঁকে খেতেই ঝরে পড়ার উপক্রম হচ্ছিল। কিন্তু সব দুঃশ্চিন্তার অবসান ঘটিয়ে আশার আলো হয়ে দেখা দিয়েছে আমাদের ইউনিয়নের ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তারা বিনা পারিশ্রমীকে আমার মাঠের ধান কেটে দিয়েছে। জানাযায়, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ছাত্রলীগের প্রতি ইউনিটের নেতাকর্মীকে কৃষকের পাশে থেকে ধান কাটাসহ সর্বাত্মক সহযোগিতার উদাত্ত আহ্বান জানাই। তারই ধারাবাহিকতায় যশোর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সালাউদ্দিন কবির পিয়াস ও সাধারণ সম্পাদক তানজীব নওশাদ পল্লব সাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে যশোর জেলাধীন সকল উপজেলা/পৌর/ইউনিয়ন/ওয়ার্ড ছাত্রলীগের নেতাকর্মীকে কৃষকের পাশে থেকে ধান কেটে দেওয়ার নির্দেশনা দেন। তাই যশোর জেলা ছাত্রলীগের নির্দেশে নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি শাহীন আলম ও সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম কিরনের নেতৃত্বে অসুস্থ ওই কৃষকের ধান কেটে দেয় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। শাহীন আলম আরোও বলেন এই কৃষকের অসহায়ত্বের কথা শুনে নরেন্দ্রপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে তার ধান কেটে দিয়েছি। এ সংকটকালে প্রয়োজনে অন্যদের ধানও কেটে ঘরে তুলে দেবে প্রাণের সংগঠন ছাত্রলীগ। অন্যান্য নেতাকর্মীর মধ্য ধান কাটাই অংশ নেন, ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ সভাপতি সিদ্ধার্থ বিশ্বাস, বি এম মোর্তজা, সোহাগ সাহা, ইমরান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রিজভী রহমান বিশাল, সাংগঠনিক সম্পাদক মোল্যা তরিকুল, মিরাজ হোসেন, প্রচার সম্পাদক মোঃ মহিউদ্দিন সানি, কাদের বরকন্দাজ, শাহারিয়ার ইসলাম হৃদয়, ইমন, বায়জিদ সহ অনেকে।