যশোর-খুলনা মহা সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ওভার লোডের কারনে

http://www.71news24.com/2019/03/18/1128

শেখ গফ্ফার রহমান, স্টাফ রিপোর্টারঃ

যেকোন সড়ক পাকা হলেই যেকোনো ওজনের যানবাহন চলাচলের উপযোগী হয় না। অঞ্চল ভেদে সড়কের যানবাহন ধারণ ক্ষমতা ভিন্ন হয়। গ্রামাঞ্চলে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের তৈরি সড়কের সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতা ৮ টন। উপজেলা এলাকায় ১২ টন। জাতীয় মহাসড়কগুলোতে সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতা ৪০ টন। স্থানীয় মহাসড়কে ২২ টন। সড়ক আইনের এ হিসেব কাগজে থাকলেও সড়কে নেই। প্রতিটি সড়কে ধারণক্ষমতায় কয়েকগুণ বেশি ওজনের যানবাহন চলছে সর্বক্ষণ।

এ চলাচলে কোনো নিয়ন্ত্রণ না থাকায় রাস্তাগুলো দ্রুত নষ্ট হচ্ছে। শহরাঞ্চলের নষ্ট সড়ক সংস্কার হলেও গ্রামে হচ্ছেই না। যে কারণে মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগেই রাস্তা গর্তে পরিণত হচ্ছে। বাড়তি ওজন বহন করার কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।

২০১২ সালের এক্সেল লোড নীতিমালা আইন অনুযায়ী ৬ চাকা বিশিষ্ট মোটরযানের যানবাহন ও মালামালসহ সর্বোচ্চ ওজনসীমা ২২ টন। ১০ চাকা বিশিষ্ট মোটরযানের সর্বোচ্চ ওজনসীমা ৩০ টন এবং ১৪ চাকা বিশিষ্ট মোটরযানের সর্বোচ্চ ওজনসীমা রয়েছে ৪০ টন।

যশোর জেলাএলজিইডি’র তথ্য মতে, গ্রাম অঞ্চলে সড়কের ধারণ ক্ষমতা ৮ টন এবং উপজেলা পর্যায়ে সড়কের ধারণ ক্ষমতা ১২ টন পর্যন্ত। অর্থাৎ গ্রাম্য রাস্তায় বাস ট্রাক (৬ চাকা বিশিষ্ট) চলাচলের উপযোগী না।

অথচ অধিকাংশ রাস্তায় পণ্যবাহী ট্রাক বিশেষ করে ভাটার ইট-মাটিবাহী ট্রাক চলছে। ফলে গ্রামীণ জনপদে যোগাযোগ ব্যবস্থার যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে তার স্থায়ীত্ব মারাত্মক ভাবে কমে যাচ্ছে। মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই ভেঙে খানাখন্দ পরিনত হয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ রাস্তা। শহরের রাস্তার অবস্থাও একই।

আইনে শাস্তির বিধান থাকলেও কার্যকর হয় না। অতিরিক্ত পণ্য পরিবহন যে অপরাধ এ তথ্য জানা থাকলেও মানে না অধিকাংশ ট্রাক চালক ও মালিক।

যশোর সড়ক ও জনপথ বিভাগ থেকে জানাযায়, পণ্য পরিবহনের লোড পরিমাপ করার জন্য জেলায় ২ টি এক্সেল রয়েছে । ১টি স্থায়ী এবং আর ১টি অস্থায়ী। এগুলো নিয়মিত ব্যবহৃত হচ্ছে।

যশোর ট্রাপিক পুলিশ সূত্রে জানাযায়, মাত্রা অতিরিক্ত পণ্যবাহী যানবাহনের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দেওয়া হয়। অনেক সময় আমরা এক্সেল লোড পরিমাপ করে জরিমানাও করে থাকি। এ বিষয়ে আমরা সর্বদা তদারকি করে যাচ্ছি। আইন ভঙ্গ করলে কোনো ছাড় দেওয়া হয় না।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের একজন সিনিয়র সহকারী প্রাকৗশলী বলেন, বেশির ভাগ চালকেরা সহজ পথে চলার চেষ্টা করে। অনেক ছোট রাস্তা দিয়ে ভারি যানচলাচল করে। যার কারণে রাস্তা মেয়াদের আগেই বসেও গেছে।

এগুলো দেখার দায়ীত্ব স্থানীয় পর্যায়ে ইউনিয়ন পরিষদ, জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের। তিনি বলেন, ভ্যান চলার উপযোগী রাস্তায় ২০ টনের মাটি টানা গাড়ি চলে। যার কারণে রাস্তার কার্পেটিং উঠে যায়। নতুন রাস্তা করার পরপরই নষ্ট হয়ে যায়।

বিআরটিএ যশোর-নড়াইল সার্কেলের সহকারী পরিচালক(ইঞ্জি.) বলেন, আমরা মোবাইল কোর্ট বসিয়ে সীমা অতিরিক্ত পণ্যবাহী যানবাহনে জরিমানা বা মামলা দিয়ে থাকি। মালিক শ্রমিক সচেতন না হলে এটা বন্ধ করা সম্ভব না। গাড়ির মালিকেরা পণ্যবাহী গাড়িতে অতিরিক্ত লোড দেয় বেশি লাভের আসায়।

এ কারণে গাড়িগুলো দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ে। এতে শুধু রাস্তার ক্ষতি হয় না গাড়িরও হয়। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট’র মাধ্যমে নিয়মিত মোবাইল কোর্ট বসানো হয়।
তিনি বলেন গ্রামীণ রাস্তায় ইউএনও অথবা এসিল্যান্ড মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক সাজা দিলে কিছুটা ভীতির সৃষ্টি হবে।

Please follow and like us: