জি এম অভি :
যশোরে ধর্ষনের শিকার এম এম কলেজের অর্নাস একাউন্টিং দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী মাহমুদা ঐশি (১৯) সিজারের পর মারা গেছে। মাহমুদা ঐশি শহরতলী নতুন উপশহর সি ব্লকের ৩৭ নং ফয়জুর রহমানের বাড়ির ভাড়াটিয়া আসাদুজ্জামানের মেয়ে।
এঘটনায় ঐশির পিতা আসাদুজ্জামান বাদি হয়ে শামিম, নাসিম ও নাঈমের বিরুদ্ধে কোতয়ালি থানায় মামলা করেছেন। মামলা নং-৪৪। তারিখ-১৮.০৭.১৯। ঘটনা সাথে জড়িত অভিযোগে পুলিশ বৃহস্পতিবার রাতে উপশহরের বাড়ি থেকে নাঈমকে আটক করে।
আটক নাঈম উপশহর এস ব্লকের ২৪/২৫ নং বাড়ির সৈয়দ রওশন আলীর ছেলে। ধর্ষনের ঘটনায় কোতয়ালি থানায় মামলা হয়েছে।
নিহত মাহমুদা ঐশির পিতা আসাদুজ্জামান জানান, ঐশি এম এম কলেজের একাউন্টিং দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। একই কলেজের পড়ার সুবাদে উপশহর এস ব্লকের সৈয়দ রওশন আলীর ছেলে নাসিম ও নাঈমের সাথে ঐশির পরিচয় হয়। নাসিম ও নাঈমের সাথে পরিচয়ের পর তাদের বড় ভাই সৈয়দ শামিমের সাথে ঐশির পরিচয় করিয়ে দেয়। শামিমের সাথে পরিচয়ের পর থেকে ঐশিকে শামিম নানা ধরনের প্রলোভন দেখাতো প্রেমের প্রস্তাব দিত। কিন্তু ঐশি প্রথমে শামিমের প্রস্তাবে রাজি হয়নি। শামিমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় শামিম ঐশিকে ভয়ভীতি দেখায় ও তার পিছনে লেগে থাকে। একপর্যায়ে ঐশি শামিমের প্রস্তাবে রাজি হয়। প্রায় দুবছর শামিমের সাথে ঐশির প্রেমের সম্পর্ক হয়। প্রেমের সম্পর্কের পর বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শামিম ঐশির সাথে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তোলে ও নিয়মিত মেলামেশা করে। ঐশি, শামিমকে বিয়ে করতে বললে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে তালবাহানা করে পাশ কাটিয়ে যায়। শামিমের পিতা-মাতাকে ঘটনা সম্পর্কে জানালে তারা কোন কর্নপাত না করে ছেলেকে (শামিম) আরো উস্কে দেয়। গত ৩ এপ্রিল দুপুর ১ টার দিকে কলেজ ছুটির পর নাসিম ও নাঈমের সহায়তায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ফুসলিয়ে ঐশিকে তাদের বাড়ি নিয়ে ধর্ষন করে। গত ১২ জুলাই ঐশি অসুস্থ হয়ে পড়ে কিন্তু বাড়িতে কিছু বলে না।
ঐশির ছোট মা জনি খাতুন জানান, আমরা মনে করেছি ঐশির পুরাতন পেটে ব্যাথা হয়তো বেড়েছে। আগে ঐশির প্রায় পেটে ব্যাথা হতো। এই ভেবে তারা অতোটা গুরুত্ব দেননি। ১৭ জুলাই বিকেলে ঐশি আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে কুইন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালের গাইনি কনসালটেন্ট নার্গিস আকতারকে দেখানো হয়। ডা. নার্গিস আক্তারের পরামর্শে ঐশির পরীক্ষা নীরিক্ষা করা হয়। পরীক্ষা নীরিক্ষার পর ডা. নার্গিস আক্তার জানান- ঐশির পেটে বাচ্চা আছে। বুধবার রাতে ঐশির সিজার করা হয়। এরপর ঐশির শারীরিক অবস্থা খারাপ হয়ে গেলে বৃহস্পতিবার বিকেলে ঐশিকে ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ইবনে সিনা হাসপাতালের ম্যানেজার তারেক জানান, আইসিইউ সাপোর্টের জন্য ঐশিকে বৃহস্পতিবার বেলা ৩ টা ৪৫ মিনিটের সময় ইবনে সিনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদিন ভোর আনুমানিক তিনটার দিকে ঐশি মারা যায়। ময়না তদন্তের জন্য শুক্রবার সকালে ঐশির লাশ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে প্রেরন করা হয়।
জেনারেল হাসপাতালের ময়না তদন্তকারি ডা. কাজল মল্লিক জানান, গর্ভধারনের নাড়িতে না হয়ে পাশের নাড়িতে হওয়ায় নাড়ি ব্লাস্ট হয়ে ঐশি মারা যায়।