ছিনতাইকারীদের হামলায় গুরুতর আহত হয়ে ভ্যান হারানো সেই কিশোর চালক শাহীন মোড়ল (১৪) সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা শাহীন ৮০ দিন পর নিজ বাড়ি যশোরের কেশবপুর উপজেলার মঙ্গলকোট গ্রামে ফিরেছে। তাকে দেখার জন্য এখন গ্রামের লোকজন তার বাড়িতে ভিড় করছেন।
গত ২৮ জুন সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানার ধানদিয়ায় ছিনতাইকারীদের হামলার শিকার হয় শাহীন। যাত্রীবেশী দুর্বৃত্তরা তার ওপর হামলা চালিয়ে অচেতন করে ফেলে রেখে ব্যাটারিচালিত ভ্যানটি নিয়ে পালিয়ে যায়। শাহীন মোড়ল মঙ্গলকোট গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে।
স্থানীয় ওয়ার্ড মেম্বার রায়হান জানান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে শাহীন গত ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে বাড়িতে ফিরেছে। তার অবস্থা এখন ভালোর দিকে। তবে ডানহাতের নড়াচড়া এখনও স্বাভাবিক হয়নি। চিকিৎসকরা বলেছেন, মাথার ক্ষত পুরোপুরি শুকালে ধীরে ধীরে এটি ঠিক হয়ে যাবে।
কেশবপুর থানা পুলিশের ওসি মোহাম্মদ শাহীন জানিয়েছেন, ভ্যানচালক শাহীন বাড়িতে ফিরেছে। এখন মোটামুটি ভালো আছে বলে খোঁজখবর নিয়েছেন। হামলার পর কয়েকদিনের মধ্যেই ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে তারা আটক করেছিলেন। ঘটনাস্থল সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটায় হওয়ায় মামলার অবস্থাটি সংশ্লিষ্ট থানায় দেখভাল করছে।
হামলার ঘটনার পর শাহীন সাংবাদিকদের জানিয়েছিল, ২৮ জুন সকালে ভ্যান নিয়ে সে বাড়ি থেকে বের হয়। কেশবপুর থেকে চারজন যাত্রী তার ভ্যান ভাড়া করে পার্শ্ববর্তী উপজেলা সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানার ধানদিয়ায় নিয়ে যায়। যাত্রীবেশী ওই দুর্বৃত্তরা তাকে ধানদিয়ায় রাস্তার দু’ধারে পাটক্ষেতের নির্জন স্থানে নিয়ে মাথায় আঘাত করে। মাথা ফেটে শাহীন অচেতন হয়ে পড়লে তার ভ্যানটি নিয়ে পালিয়ে যায়। পরে জ্ঞান ফিরলে শাহীনের কান্নার শব্দে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে থানায় খবর দেয়। পুলিশ শাহীনকে উদ্ধার করে প্রথমে সাতক্ষীরা হাসপাতাল ও পরে খুলনা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়।
শিশু শাহীনের রক্তাক্ত ছবিসহ খবরটি গণমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। পরে ঢামেকে চিকিৎসাধীন শাহীনের চিকিৎসার ব্যয়ভার গ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী।